বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ব্রেন টিউমারে মৃত্যুর দুয়ারে রিক্সা চালক সুজন

মঙ্গলবার, মার্চ ৮, ২০২২
ব্রেন টিউমারে মৃত্যুর দুয়ারে রিক্সা চালক সুজন

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

ব্রেন টিউমারে মৃত্যুর দুয়ারে ছটফট করছে রিক্সা চালক সুজন মিয়া (২৫)। মাত্র চিকিৎসার জন্য দরকার দুই লাখ টাকা। 

রিক্সা চালক সুজন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের রসূলপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

জানা গেছে, ভ্যান চালক ভুমিহীন বাবার অভাবের সংসারে তেমন লেখা পড়া সম্ভব হয়নি সুজনের। তাই অল্প বয়সেই রিক্সার প্যাডেল চালিয়ে বাবার অভাবের সংসারের হাল ধরেন তিনি। গত ৩ বছর আগে হঠাৎ অসুস্থ্য হলে রিক্সা চালা বন্ধ হয়ে যায় সুজনের। অন্ধকারে ঢেকে যায় তাদের ৩ সদস্যের সংসারের আলো। সুজনকে সুস্থ্য করতে ধার দেনা করে বিভিন্ন চিকিৎসকের পিছনে ঘুরে কোন ফল আসেনি সুজনের পরিবারের।

গত বছর রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. তোফায়েল হোসেন ভুঁইয়ার কাছে যান সুজন। তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানান সুজনের ব্রেন টিউমার হয়েছে। অস্ত্রপাচার করলে অনেক টাকা লাগবে। দুস্থ গরিব সুজনের পরিবারের পক্ষে এত টাকা ব্যায় করা সম্ভব নয়। তাই চিকিৎসক ওষুধে রোগ নির্মুলের চেষ্টা করেন। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করে কিছুটা সুস্থতা লাভ করলেও অর্থের অভাবে পুরো ওষুধ খেতে পারেন নি রিক্সা চালক সুজন। ফলে আবারও অসুস্থ্য হয়ে পড়েন।

অবশেষে সুজনের আয়ের পথ রিক্সাটি বিক্রি করে গত সপ্তাহে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক ডা. সালাহ উদ্দিন আহম্মেদের কাছে নেয়া হয় সুজনকে। তিনিও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ব্রেন টিউমারের ঘোষনা দেন। সেই সাথে দ্রুত অস্ত্রপাচার করার পরামর্শ দেন। টিউমার বড় হয়েছে যা ওষুধে নির্মুল যোগ্য নয়। সুজনকে বাঁচাতে ১০/১৫ দিনের মধ্যে অস্ত্রপাচার করতে হবে। এতে প্রয়োজন দুই লাখ টাকা। রোগ নির্নয় করতেই টাকা শেষ। একমাত্র ছেলেকে বাঁচানোর খরচ  শুনে হতবাক হয়ে পড়েন ভ্যান চালক আব্দুল কুদ্দুস। তার থাকার ঘর আর ভ্যান গাড়িটি ছাড়া কোন সম্বল নেই। ছেলেকে বাঁচাতে কে দিবে এত টাকা।

নিরুপায় বাবা একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের দুয়ারে ছুটছেন। কিন্তু তেমন কোন সাড়া পাননি। অপর দিকে সময় যত ঘনিয়ে আসছে সুজনের শরীর খারাপের দিকে যাচ্ছে। চোখের সামনে একমাত্র ছেলের মৃত্যু যন্ত্রনা সহায় করতে পারছে না সুজনের বাবা মা। নিরুপায় বাবা মা মৃত্যু পথযাত্রী ছেলেকে শান্তনা দিতে সোমবার(৭ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। যদিও সেখানে তাকে সুস্থ্য করার মত কোন চিকিৎসা নেই।

সুজনের মা আম্বিয়া খাতুন বলেন, ডাক্টার বলছে দুই লাখ টাকা হলে অপারেশন করে সুজনকে ভাল করা যাবে। না হলে সুজনকে বাচানো যাবেনা। ঘর আর ভ্যান গাড়ি ছাড়া হামার কিছুই নাই। কায়(কে) হামাক(আমাদের) এতগুলো টাকা দিবে?। গরিব মানুষ হওয়ায় কায়ো ঋনও দেয় না। সাহায্যও দেয় না কেউ। সমাজের বিত্তবানদের কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্য কামনা করেন তিনি। তার মোবাইল নম্বর - ০১৩০১১০৬৫০৯।

সুজনের প্রতিবেশী লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চিকিৎসকদের বর্ননামতে দ্রুত অস্ত্রপাচার করলে সুজনকে বাঁচানো সম্ভব। কিন্তু তার গরিব বাবা মায়ের পক্ষে দুই লাখ টাকা যোগার করা অসম্ভব। সদর হাসপাতালে তাকে সুস্থ্য করার মত চিকিৎসা নেই। তবুও শান্তনা দিতে সুজনকে তার বাবা মা ভর্তি করেছেন। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে এ পরিবারের একমাত্র সম্বল সুজনকে বাঁচানো সম্ভব। সুজন ছাড়া পরিবারও অচল হয়ে পড়বে।

সময় জার্নাল/ইএইচ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল