সিয়াম মাহমুদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কৃত্রিম শৈল্পিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের পতাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধিন সদর উপজেলার সন্তান মেধাবী শিক্ষার্থী মোঃ রাজু আহমেদ রাজুর উদ্যোগে একটি জমিতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আদলে নান্দনিক লাল-সবুজের শস্যচিত্র ফসলের চাষ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাল-সবুজের শস্যজমি চাষের খবর পেয়ে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো দর্শনাথী একপলক জমিটিকে দেখার জন্য আসেন। ভ্রমণবিলাসী, জ্ঞানপিপাসু এবং চিত্রশিল্পীদের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই স্থানটি বর্তমানে আকর্ষনীয় স্থান হয়ে উঠেছে।
রাজু আহমেদ তার নিজ গ্রামের প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে দেশি এবং বিদেশি জাতের ধানের সমন্বয়ে এই ফসলের চাষ করেছেন। তবে ফসলের জমির মাঝখানে লাল বৃত্ত দেখতে মনে হলেও সেটি আসলে বেগুনি রংয়ের পাপেল রাইজ ধান, যাকে বেগুনি ধানও বলা হয়ে থাকে। দূর থেকে এই বেগুনি রংটিকে সবুজের মাঝে বাংলাদেশের পতাকার লাল বৃত্ত মনে হয়।
রাজু আহমেদ সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের পূর্ব পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে লেখাপড়া করছেন।
এই বিষয়ে মোঃ রাজু আহমেদ বলেন, গতবছরের প্রথমদিকে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে ১০০ বিঘা জমিতে ধানের চারা লাগিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছিলো। সেই সময় এমন আরও দুটি শস্যচিত্র বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে সারা ফেলেছিলো। ঠিক সেই সময় থেকেই আমারও এমন কিছু একটা করার চিন্তা এসেছিলো। পরবর্তীতে এই বিষয়ে আমি আমার ভাই, পরিবার এবং পরিচিতদের সাথে কথা বলি। সকলের পরামর্শ ও সহযোগিতায় বিভিন্ন জায়গা থেকে এই বিশেষ জাতের চারা সংগ্রহ করি। তারপর এই মাসের পহেলা ফেব্রুয়ারী জমিতে চারা রোপণ করি। এখন পর্যন্ত জমির ফসল ভালো রয়েছে। আশা করছি, আল্লাহর রহমতে ভালো ফসল পাবো, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, এটি আসলে মূলত আমার মনের খোরাক। আমি নিজে কৃষক নয়। নিজের মনের ইচ্ছা পূরণ করার জন্যই এটি করেছি। এখন আমার পাশাপাশি নিজের এলাকাসহ দূর-দূরান্তের অনেকেই খুশি হয়ে পরিদর্শন করতে এসে আনন্দ পাচ্ছেন, এতেই আমি খুবই খুশি হয়েছি।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় গতবছর বাস্তবায়ন করেছিলো ‘শস্য চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’। এ শস্যচিত্রের আয়তন ছিলো ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৩০ বর্গমিটার। পরবর্তীতে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ এই প্রতিকৃতিকে ‘লার্জেস্ট ক্রপ ফিল্ড মোজাইক (ইমেজ)’ শাখায় নতুন বিশ্ব রেকর্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সময় জার্নাল/ইএইচ