এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের নগরকান্দার তালমা মোড় এলাকায় গত ২ মার্চ নির্মমভাবে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয় ব্যবসায়ী ও উপজেলা আওয়ামী মটরচালক লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হারুন অর রশিদ হারুন (৪৮) কে।
এ ঘটনায় নগরকান্দা থানায় ১৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন আহত হারুনের স্ত্রী লিপি বেগম। মামলার পর পরই পুলিশ আসামীদের ধরতে অভিযান চালিয়ে ২ জনকে গ্রেফতার করে।
সোমবার (১৪ মার্চ) ৫ জন আসামী আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এলাকার কতিপয় দুর্বৃত্ত দিনে দুপুরে হারুনকে ফ্লিমি স্টাইলে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। হামলাকারীরা হারুনকে শুধু কুপিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি তার দুই হাত ও দু’পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। ঘটনার সময় হামলাকারিদেরে ভয়ে হারুনকে বাচাঁতে কেউ এগিয়ে আসেনি। মারাত্মক আহত অবস্থায় হারুনকে দু্রত ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী, থানা পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বিকালে হারুন তালমা মোড়ে হাসান স্টোর নামের একটি দোকানে বিকাশে টাকা তুলতে যায়।
সে সময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা কয়েকজন সন্ত্রাসী তার ওপর রামদা, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রকাশ্যে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মক আহতবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। আহত হারুনকে দ্রুত ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হারুনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানান।
আহত হারুন ও তার স্বজনরা জানান, সম্প্রতি শেষ হওয়া তালমা ইউপি নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে অংশ নেওয়ায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয় প্রতিপক্ষরা। নির্বাচনের আগে থেকেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। নির্বাচনের পর এ নিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে তার কয়েকবার ঝামেলা হয়। সন্ত্রাসীরা তাকে ব্যবসা বন্ধ করে অন্যত্র চলে যাওয়ারও হুমকি দেয়। এ নিয়ে তিনি থানায় মামলা করেন। মামলার পর থেকে আরও ক্ষিপ্ত ছিল প্রতিপক্ষের লোকজন।
হামলার সময় একটি দোকানের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, হারুন বিকাশের দোকানে দাঁড়িয়ে থাকার সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ব্যাগ হাতে একটি লোক দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। সাথে সাথে আরও চার ব্যক্তি দোকানের সামনে গিয়ে হারুকে টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসে। পরে তারা তাদের ব্যাগের মধ্যে থাকা ছ্যান ও রামদা এবং লোহার রড দিয়ে বেদমভাবে কোপাতে থাকে। এসময় হারুন চিৎকার করলেও দোকানের সামনে থাকা অন্তত ১০/১২ ব্যক্তি নীরবে দাঁড়িয়েছিল। তারা সন্ত্রাসীদের ভয়ে হারুনকে রক্ষা করেনি। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর কয়েক ব্যক্তি একটি ভ্যানে করে হারুনকে হাসপাতালে পাঠায়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কিবরিয়া জানান, এজাহারে ১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। আমরা ঘটনার সাথে জড়িত এবং এজাহার নামীয় ২ জনকে গ্রেফতার করি। সোমবার (১৪মার্চ) ৫জন আদালতে সারেন্ডার করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এ পর্যন্ত ৭ জন আসামী কারাগারে রয়েছে।
এমআই