এহসান রানা , ফরিদপুর:
দেশ ও জাতির পরম সৌভাগ্যের বছর, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ফরিদপুরে উদযাপিত হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস।
এ্ উপলক্ষ্যে (১৭ মার্চ ) বৃহস্পতিবার ফরিদপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক বিস্তর কর্মসূচি গ্রহণ ও উদযাপিত হচ্ছে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে সপ্তাহব্যাপী উদ্বোধন করা হয়েছে মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণ জয়ন্তী মেলা।
সকাল সাড়ে ৭ টায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক অম্বিকা ময়দানে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক জনাব অতুল সরকার। এছাড়া জেলা পুলিশ, জেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ শহর শাখা প্রাঙ্গনে শিশু কিশোর সমাবেশ ও শতকন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। সকাল সোয়া ৯ টায় শিশু কিশোরদের পরিচালনায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ১০২ পাউন্ডের কেক কেটে সমাবেশের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষার্থী নওরোজ অহন জিৎ। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট শামসুল হক ভোলা মাস্টার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ, আওয়ামীলীগ নেত্রী ঝর্না হাসান প্রমুখ। শিশুদের মধ্যে ফারহানা জামান, হাফসা বিনতে হায়দার, প্রভাতী নূর বক্তব্য প্রদান করেন। আলোচনা সভা উপস্থাপন করেন শিশু শিক্ষার্থী সুদীপ্তা কর্মকার ও তাহীরা তাসনিম মিলা।
বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্তাব্যক্তি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ ফরিদপুরের সর্বস্তরের জনতা অনুষ্ঠান উপভোগ করে।
সকাল ১১ টায় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ শহর শাখা চত্ত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর উপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়। অনুষ্ঠিত হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। বাদ জোহর সকল মসজিদ, মন্দিরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, দেশের উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিল, মোনাজাত ও বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম ও শিশু দিবযত্ন কেন্দ্র, সামাজিক প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র, মূক ও বধির বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে কেক কাটা ও উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
দিনব্যাপী শেখ রাসেল পৌর শিশু পার্কে বিনামূল্যে শিশুদের প্রবেশ ও বিভিন্ন খেলা ও রাইড উপভোগের ব্যবস্থা করা রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাষন, তথ্যচিত্র ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর করা হয়। এদিকে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, দেয়াল পত্রিকা, স্মরনিকা প্রকাশ, কুইজ ও বিতর্ক এবং কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে শিশুদের নিয়ে আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া মাসব্যাপী জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণপূর্বক তাঁদের নিকট থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব গাঁথা’ শ্রবণ করা হচ্ছে।
সন্ধ্যায় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ শহর শাখা প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরষ্কার বিতরণী এবং বর্ণিল আলোক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এমআই