মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জন্মস্থানে সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের মরদেহ

শনিবার, মার্চ ১৯, ২০২২
জন্মস্থানে সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের মরদেহ

নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের মরদেহ নিজ জন্মভূমি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের পেমই গ্রামে পৌঁছেছে। শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তার মরদেহবাহী হেলিকপ্টার কেন্দুয়া পৌর শহরের চকপাড়া এলাকার হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। 

পরে সেখান থেকে মরদেহ পেমই গ্রামে নেওয়া হয়। ওই গ্রামে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের মরদেহ একনজর দেখার জন্য এলাকার শত শত লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করেছেন। 

সাহাবুদ্দিন আহমদের ভাতিজা সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিকেল পৌনে ৪টার দিকে  সাহাবুদ্দিন আহমদের মরদেহ পেমই গ্রামে পৌঁছেছে। এরপর এখানে প্রথম জানাজা শেষে আবারও মরদেহ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৯২ বছর। কয়েক বছর ধরে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

সাহাবুদ্দিন আহমদ নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানার পেমই গ্রামে ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা তালুকদার রেসাত আহমদ ভূঁইয়া ছিলেন একজন খ্যাতনামা সমাজসেবক এবং জনহিতৈষী ব্যক্তি। সাহাবুদ্দিন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৪ সালে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। তিনি লাহোর সিভিল সার্ভিস একাডেমি থেকে সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিষয়ে একটি বিশেষ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন। 

গোপালগঞ্জ ও নাটোরের মহকুমা প্রশাসক পদে কিছু দিন চাকরির পর সাহাবুদ্দিন আহমদ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৬০ সালের জুন মাসে তাকে বিচার বিভাগে বদলি করা হয় এবং প্রশাসনের নির্বাহী বিভাগে তার চাকরির সমাপ্তি ঘটে। তিনি ঢাকা ও বরিশালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ২০ জানুয়ারি তাকে হাইকোর্টের বিচারপতি পদে উন্নীত করা হয়। মাঝে তিনি প্রেষণে নিযুক্ত হয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৭৩-৭৪)। এরপর বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে প্রত্যাবর্তন করেন।

১৯৮০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সাহাবুদ্দিন আহমদকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। 

১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি সাহাবুদ্দিন। ওই ঘটনায় কয়েকজন ছাত্র নিহত হয় এবং বহু ছাত্র আহত হয়। কিন্তু ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হলেও তৎকালীন সরকার এই তদন্ত প্রতিবেদন কখনোই জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি।

সাহাবুদ্দিন আহমদ ১৯৮৪ সালে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য উচ্চ হারে বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়। ১৯৭৮ সালের আগস্ট থেকে ১৯৮২ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আপিল আদালতের বিচারপতিদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করেন তিনি।

১৯৯০ সালের ১৪ জানুয়ারি সাহাবুদ্দিন আহমদকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। 

সাহাবুদ্দিন আহমদ ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে রাষ্ট্রপতি করা হয়। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অবসর নেন।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল