এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
পবিত্র রমজানের মধ্যে ফরিদপুর পৌরসভা উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে নির্বিচারে কুকুর নিধনের জন্য মাইকিং শুরু করেছে। কুকুর নিধন বা অপসারণ প্রাণীকল্যাণ আইন ২০১৯ অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর উপরে মহামান্য উচ্চ আদালত রায় প্রদান করেছে।
আগামী রবিবার থেকে এক সপ্তাহব্যাপী এ কার্যক্রম ফরিদপুর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনির।
গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুর পৌরসভা থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, কিছুদিনের মাঝেই শহরে কুকুর নিধন শুরু হবে। সবাই যার যার পালিত কুকুর যেন ঘরে আটকে রাখে।
এদিকে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, পৌরবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে কুকুর নিধনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কুকুর নিধনের বিষয়ে পৌরসভার নাগরিক সমন্বয় সভা ও প্রশাসনিক সভায় সকলের মতামত নিয়েই এ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পৌরসভার সচিব তানজিলুর রহমান জানান, শহরে কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। মাঝে মাঝে কুকুরের কামড়ে আহত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মোড়ে মোড়ে অসংখ্য কুকুর। কুকুর আতঙ্কে শিশু বাচ্চা মহিলারা এবং বয়স্ক বৃদ্ধরা চলাফেরা করতে পারে না।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ করেছে। তবে সেখানে প্রানি সম্পদ মন্ত্রনালয়কে কুকুরের প্রজনন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। তা তারা করছে। এর ফলে কুকুরের আক্রমনের শিকার হচ্ছে জনগন।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনির জানান, পৌরসভার অর্থায়নে ও পরিচালনায় আগামী রবিবার থেকে এক সপ্তাহ ব্যাপী কুকুর নিধন কার্যক্রম পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পরিচালনা করা হবে। এজন্য পৌর এলাকায় সীমিত পরিসরে মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, পৌরবাসির আবেদনের প্রেক্ষিতেই কুকুর মারা হবে। তবে কারও পালিত কুকুর মারা হবে না। তাদের পালা কুকুরকে গলায় বেল্ট বা চিন্হ দিতে বলা হয়েছে। শুধুমাত্র পাগলা কুকুর ও ঝুঁকিপূর্ন কুকুরকে মারা হবে।
কুকুর নিধনে হাই কোর্টের আদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, হাই কোর্টের আদেশ সম্পর্কে আমি অবগত তবে অনেকটা গোপনেই এ নিধন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এমনকি পিএডাব্লিউ ফাউন্ডেশন (পিপল ফর এনিম্যাল ওয়েফেয়ার) রাকিবুল হক এমিল তাদের ভেরিফাইড পেজে লিখেছেন, ''ফরিদপুরের স্থানীয়রা জানালেন সেখানে যেকোন সময় গণহারে কুকুর নিধন করা হবে- এই বিষয়ে মাইকিং করেছে এলাকায়। প্যানেল মেয়র, সিইও এবং শেষ পর্যন্ত মেয়রের পারসোনাল নাম্বার যোগাড় করে ফোন করা হল। কেউ ফোন ধরছেন না। মেয়রকে মেসেজ পাঠিয়ে রেখেছি। ফরিদপুরের প্রাণিপ্রেমীরা সচেতন থাকবেন। এরকম কিছু ঘটতে দেখলে বাধা দিবেন। লাইভ করবেন। এটা রাষ্ট্রের আইন বিরোধী এবং সরকারের জলাতংক নির্মূল কর্মসূচিকে ব্যাহত করবে।
ফরিদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, কুকুর নিধন সম্পূর্ণ আইন বিরোধী। এই ভাবে নির্বিচারে কুকুর হত্যা যাতে না করে আমি এজন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
এদিকে কুকুর নিধনের মাইকিং করার পর প্রানী প্রেমিরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অপরদিকে যারা মাঝে মাঝেই বেওয়ারিশ কুকুরের দ্বারা যারা আক্রান্ত হয় এরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
সময় জার্নাল/এলআর