মুরাদ ইমাম কবির, হিলি প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ঐতিহ্যবাহি কেসি পাইলট মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে দখলে থাকা খাস জায়গার উপর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিবাভকরা।
আজ রোববার দুপুরে তারা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের বাসস্ট্যন্ড এলাকায় সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ করে এবং বিভিন্ন প্রকার শ্লোগান দিতে থাকে। বিক্ষোভে ছাত্র-ছাত্রী, অভিবাভক ছাড়াও স্থানীয় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ গ্রহণ করে।
প্রায় ১ ঘন্টা সময় ধরে তারা সড়কে বেরিকেট দিয়ে অবরোধ করে রাখে।এতে সড়কের দুইপ্রান্তে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে, প্রায় ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আবু হাসান কবির ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানানো এবং সরকারী ঘর নির্মাণ কার্যক্রম সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে আশ্বস্ত করলে শিক্ষার্থীরা তাদের সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কেসি পাইলট স্কুল কতৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ১৯০৫ সালে ‘মধ্য ইংরেজী স্কুল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় এবং ১৯৪০ সালে এটি নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই প্রায় ১৫০ শতক জায়গার মধ্যে ৬৬ শতক রেকর্ডভূক্ত জায়গার উপরে ক্যাম্পাস নির্মান করে। বাকি ৮৪ শতক খাস জায়গায় আম গাছের বাগান করে ভোগ করে আসছে স্কুলটি।
গত ৩০ মার্চ উপজেলা প্রশাসনের লোকজন এসে স্কুলের ভোগ দখলে থাকা জায়গা মাপযোগ শুরু করে এবং ৮৪ শতক জায়গা উপরে সরকারী আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে।
কে.সি পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের সদ্য বিলুপ্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউনূছ আলী মন্ডল বলেন, শনিবার সকাল থেকে প্রতিষ্ঠানের দখলে থাকা খাস জায়গায় ঘর নির্মান শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে এই কাজে বাঁধা দেয় শিক্ষার্থীরা। বাঁধা উপেক্ষা করে কাজ করায় হঠাৎ করেই রবিবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে পরে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গার মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মণ করলে, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নষ্ট হবে এবং এলাকাটি মাদক সেবীদের আখড়াতে পরিণত হবে।
এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফিউল আলম বলেন, ঘোড়াঘাট পৌর এলাকায় খাস জায়গা খুবই কম। ফলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় পৌর এলাকার ভূমি ও গৃহহীন লোকদের জন্য কেসি পাইলট স্কুলের পাশে আমরা ১৮টি ঘর নির্মানের জন্য খাস জায়গা নির্ধারণ করি। তারমধ্যে ৬টি ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ঘাস জায়গাটি দীর্ঘদিন থেকেই পড়ে ছিল। আপাতত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
এমআই