রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম :
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে বোরো ধান, পেয়াজ, ভুট্টা ও শাকসবজির ক্ষেত। এর মধ্যে নিচু এলাকার ক্ষেতের পুরো ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন কৃষক। তবে কৃষি বিভাগ বলছে নতুন করে উজানের ঢল না আসলে এবং বৃষ্টিপাত কমে গেলে ক্ষতির পরিমান কিছুটা কমতে পারে।
চৈত্র মাসে অসময়ে বৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢলে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজারহাট, কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী চরগুলোতে বোরো ধান, পিয়াজ, ভুট্টা, বাদাম, মরিচ, পটল, ঝিংগাসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। অসময়ে পানি চলে আসায় দুঃশ্চন্তিায় পড়েছে কৃষক।
ধার দেনা করে লাগানো ফসল ঘড়ে তুলতে না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চরা লের কৃষকরা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ
ইউনিয়নের তিস্তার চরের কৃষক আফজাল হোসেন জানান, এনজিও থেকে লোন নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে পিয়াজের আবাদ করেছি। কিন্তু বৃষ্টি ও উজানের ঢলে চরের জমিতে পানি ঢুকে সব নষ্ট হয়ে গেছে।
চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চরের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক জানান, চরের জমিতে মরিচ, পটল চাষ করেছি, ঝিংঙা চাষ করেছে। সব অসময়ের পানিতে তলিয়ে শেষ হয়ে গেছে। অন্যান্য বছর এসময় পানি না আসলেও এবার এসে সব শেষ করে দিল।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের ধরলার পাড়ের কৃষক ইয়াকুব আলী জানান, নদীর পলিতে প্রায় এক একর পরিমানে জমিতে বোর লাগিয়েছিলাম। সব তলিয়ে গেছে। সামান্য কিছু কেটে আনতে পেরেছি। বাকী সব পানির নীচে।
বোরো ধান পুরোপুরি না পাকলেও নদ-নদীর অববাহিকার অনেক কৃষক গরুর খাদ্যের জন্য পানিতে তলিয়ে থাকা আধা পাকা ধানই কেটে ঘরে আনছেন। সার, কীটনাশক, বীজসহ সব মিলিয়ে অনেক টাকা খরচ করে চরের পলি জমিতে লাগানো বিভিন্ন সবজি জাতীয় ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পথে বসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অনেক কৃষকের।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রশীদ জানান, জেলার নদ-নদী তীরবর্তী এলাকার চরা লে প্রায় ৬শ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়েছে। তবে উজানের পানি আসা কমে গেলে এবং আভ্যন্তরিন বৃষ্টিপাত কমে গেলে ক্ষতির পরিমান কিছুটা কমতে পারে।
এমআই