এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দলপক্ষ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বসত বাড়িঘর। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার রাতে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত ৫টি গ্রামের হাজারো লোক অংশগ্রহণ করে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক নারী জানান- গ্রাম্য দলপক্ষ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ইফতার শেষে আটঘর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম খান সোহাগের অনুসারী খোয়াড় গ্রামের সামাদ মাতুব্বরের সমর্থক জালাল শেখ জালা ও রবিউল শেখের সাথে গত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া মো. বকুল মাতুব্বরের অনুসারী আমিনুল মাতুব্বরের সমর্থক খবির শেখের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে । এবিষয়টি উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একর্পয়ায় উভয় গ্রুপের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র হাতে জড়ো হয়ে একে অপরের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষে প্রতিবেশী সেনহাটি, গবিন্দপুর, সিংহপ্রতাব, গোয়ালপাড়া গ্রামের হাজারো মানুষ দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে অংশগ্রহণ করে। এসব গ্রামের লোকজন খোয়াড় গ্রামের সাথে জোট বেধে গ্রাম্য দল করেন বলে জানা যায়। এতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাঙচুর। এ ঘটনায় বজলু মাতুব্বর, ফিরোজ মাতুব্বর, আহম্মদ মাতুব্বর ও জালাল শেখসহ উভয় গ্রুপের অনন্ত ১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমিনুল মাতুব্বর বলেন- সামান্য ঘটনা নিয়ে সামাদ মাতুব্বর তার দলনেতা ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগকে বলে গোয়ালপাড়া, সেনাটী, গবিন্দপুর ও সিংহপ্রতাব থেকে শতশত লোক এনে আমার লোকজনের উপর হামলা চালায়। আমার দলের নিজাম শেখের ৩টি ও সত্তার মাতুব্বরের ২াট বসতঘর ভাঙচুর করে। পরে আমার লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তুললে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সামাদ মাতুব্বর বলেন- গ্রাম্য দলপক্ষ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে আমিনুল মাতুব্বর বালিয়া গ্রাম থেকে অনেক লোকজন এনে আমার লোকজনের উপর হামলা করে। আমার দলের লোক মোহাম্মাদ ফকিরের ২টি, কুদ্দুস মাতুব্বরের ৩টি, মানিক মাতুব্বরের ৩টি, জালাল শেখে ২টি ও শুকুর মশালচীর ২টি বসতঘর ভাঙচুর করে তারা।
এমআই
ফরিদপুরের সালথা থানার এসআই মারুফ হোসেন বলেন- খবর পেয়ে পুলিশ সংঘর্ষের মাঝে অবস্থান নিয়ে প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। পরে শর্টগানের ১৫ রাউন্ড গুলি ও ১টি সাউন্ড গ্রেনেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত। তবে ফের সংঘর্ষেও আশঙ্কায় ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এমআই