মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
গ্রীষ্মের শুরুতে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকটএক কলস পানির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা উপকূলীয় শ্যামনগবাসীর নিত্যদিনের ঘটনা। মাঝে মাঝে বে-সরকারি একটি সংস্থার সরবরাহ করা জারের পানির উপরে ভরসা করে থাকতে হয় অনেক উপকূলবাসীর।
ভেটখালি গ্রামের জোহরা বেগম বলেন, আমাদের পরিবারে চাহিদা মেটাতে ৭-৮ মাইল পায়ে হেটে পানি আনতে যেতে হয়। সেখানে গিয়ে ঘন্টা কি ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়।
সুন্দরবন গ্রামের আমেনা খাতুন বলেন, মাটির পাত্রে, পানির বোতলে বৃষ্টি পানি সংগ্রহ করে ২-৩ মাস ধরে খেয়ে থাকি। তবে এখন বৃষ্টি না হওয়ায় দূর থেকে পানি আনতে হয়। গাবুরা ইউনিয়নের ছাত্তার গাজী বলেন, চারিদিকে চোখ যায় পানি আর পানি। তবে খাওয়ার পানি না! ড্রামে করে নদীর ওপার থেকে নৌকা ভাড়া করে খাবার পানি আনতে হয়। মাঝে মাঝে মানুষের টাকা দিয়ে পানি আনায় নিতে হয়।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির সংকট নিরসনে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে পানির ট্যাংকি প্রদান করা হয়েছে। যেসব এলাকার গভীর নলকূপ থেকে লোনা পানি উঠে সেসব এলাকায় পুকুর কেটে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির সংকট সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি। গভীর ও অগভীর নলকুপ স্থাপন করছি। রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং প্লান্ট স্থাপন করছি। আয়রন ও আর্সেনিক দূরিকরণেও আমরা কাজ করছি। আশা করি অচিরেই খাবার পানি সংকট দূর হবে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, জেলার ৬৩ ভাগ মানুষ সূপেয় পানি পাচ্ছে, সরকারিভাবে এ তথ্য দেওয়া হলেও সুপেয় পানি পান করতে পারছেন না ৫০ ভাগের বেশি মানুষ।
সংস্কারের অভাবে উপকুলীয় এলাকায় সরকারিভাবে বসানো ৬৫০টি পিএসএফের অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। জেলা পরিষদের ৭৩টি পুকুর পুনঃখনন করে কাটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে। এছাড়া ১৫ হাজার গভীর নলকূপ,৮ হাজার রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টারসহ ৪২ হাজার পানির উৎস চলমান রয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন এনজিও-র’ মাধ্যমে প্রতিটি পারিবারে মাঝে পানির ট্যাংক বিতরণ করা হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর