ইসাহাক আলী, নাটোর: দেখে বোঝার উপায় নেই, এটা পিচঢালা কোন পাকা রাস্তা। রাস্তার ওপর মাটির প্রলেপ পড়ে পুরো রাস্তা যেন বোরো রোপনের জমিতে পরিণত হয়েছে। এখন আর দেখে বোঝার উপায় নেই এখানে পাকা রাস্তা ছিল। আর এমন পরিস্থিতিতে পাকা রাস্তার কাঁদার মধ্যে ধানের চারা রোপন করে প্রতীকি প্রতিবাদ জানিয়েছে এলাকার কিশোর ও শিশুরা। তারপরও থেমে নেই জেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ পুকুর খননের কাজ। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে এমন অবৈধ পুকুর খনন। এতে করে ফসলী জমি উজার হওয়ার সাথে রাস্তা ঘাটে কাঁদার স্তুপ জমে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে , বাড়ছে বিড়ম্বনা। এছাড়া দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন চলাচলকারীরা।
বুধবার ভোরবেলা বৃষ্টি হওয়ায় বর্তমান অবস্থা এতোটাই খারাপ যে, যানবাহন ও পথচারীরা পাঁয়ে হেঁটে যাতায়াত করতে গেলেও পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে। নাটোরের নলডাঙ্গা, লালপুর, বাগাতিপাড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা জুড়ে রাস্তা দিয়ে মাটি বিক্রি করার কারনে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন বার বার অভিযান চালিয়েও মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে পারেনি। রাস্তার এমন করুন অবস্থার জন্য রাস্তার ওপর ধানের চারা রোপন করে প্রতীকি প্রতিবাদ করতেও দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাটোরের নলডাঙ্গার পাটুল পশ্চিমপাড়া, আঁচড়াখালী, পিপরুল. বাসুদেবপুর ও জামতৈলের বিভিন্ন রাস্তায় কাঁদা জমে
আছে। এছড়াড়া বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়কের হাজিরহাট থেকে কাছিকাটা বিশ্বরোড মোড়, কাছিকাটা থেকে চাঁচকৈড়, আনন্দনগর থেকে খুবজিপুরসহ উপজেলার কমপক্ষে ১০টি সড়কেও এমন অবস্থা দেখা যায়। হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ার কারনে বুধবার সকাল থেকেই বেশ কয়েকটি দূর্ঘটনা ঘটেছে।
গুরুদাসপুরের কাছিকাটা সড়কের পাশের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কাটি ব্যবসায়ীদের কারনেঅতিষ্ঠ হয়ে ছিলাম। আজকে এই রাস্তায় পাঁয়ে হেটেও চলাও সম্ভব হচ্ছে না। সকাল থেকেই বেশ কয়েকটা দূর্ঘটনা ঘটেছে। রাস্তার এই বেহাল দশার কারনে সচেতন মানুষের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমলোচনা ঝড় বইছে।
রাস্তায় চলাচলকারী ট্রাক চালক আব্দুস সোবাহান জানান, রাস্তায় কাদার জন্য খুবি ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এছাড়াতো কোন উপায় নেই।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল বলেন, যেসব রাস্তায় মাটি পড়ে কাঁদা হয়ে আছে। সেই রাস্তাগুলো পরিস্কার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিকে লালপুরের গৌরিপুর রাস্তার চামটিয়া এলাকার রাস্তায়ও এমন পরিস্থিতি। সিংড়ার মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন সড়কেও এমন পরিস্থিতি ও নাগরিক দূর্ভোগের খবর পাওয়া গেছে। বড়াইগ্রামের বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক এখন জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাগাতিপাড়ার আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীন সড়কে চলাচল করতে পারছে না পথচারীরা।
তবে এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের ভূমিকা অনেকটাই গাঁছাড়া। জনগনের দূর্ভোগের পরও তাদের নিরবতায় হতাশা ক্ষোভ জানিয়েছেন পথচারী ও ভুক্তভোগিরা।
এ ব্যাপারে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, রাস্তা প্রস্তুত ও মেরামতের কাজটা আমরা করি জনগনের চলাচলের জন্য। অন্য কোন কারণে জনদূর্ভোগ হলে তা সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
এমআই