কদর রাতে সেই চাওয়াতে
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
ঠোঁটের ফাঁকে জড়িয়ে থাকে অসীম ভালোবাসা,
মনের মণিকোঠায় তবু সর্বনাশা ঠাঁসা।
দেখছে সবাই লুটিয়ে সদাই, দিবস কি'বা রাতি,
আকুল স্বরে, কাবার দোরে, ভীষণ মাতামাতি।
সংসারে হায়, মন টেকা দায়, কইছে হা-হুতাশে!
প্রাণের মাঝে সকাল-সাঝে কাবার ছবি ভাসে।
নির্জনে ঠাঁই হক মাওলায়, যায়না বদন দেখা,
হঠাৎ যেটুক উদ্ভাসিত, ছলকে নুরের রেখা।
শতেক জনে দোরের কোণে, যাকাত নিতে ঠাঁই,
হরেক সালিশ, দুঃখের নালিশ ভিড় করে দরগায়।
কেউবা আনি তেলের ঘানি, পানির ঘড়া নিয়ে,
শেকড় চাঁছা, তাবিজ গাছা রুমালে গিঁট দিয়ে।
বুজুর্গানে সন্নিধানে একটু ছোঁয়া পেলে,
তাবিজ হবে মন্ত্রপূত, বাঁধবে রোগীর গলে।
যতই লোকে তারিফ ঠোকে, বুজুর্গ গম্ভীর,
তাসবিহ দানায় মনটা টানায়, সুউচ্চ জিকির।
খুব আয়েশে মিলাদ বসে, বেষ্পতিবার এলে,
আগরবাতি জ্বালিয়ে গাছিক, গোলাপপানি ঢেলে।
হাড়-হাভাতে কোনোমতে হাত পেতে রয় চেয়ে,
ফিতরা-যাকাত, দু'মুঠো ভাত পায় যদি, যায় নিয়ে।
পেয়ারে নবী, নুরের ছবি দু'শো টাকা দরে,
বস্ত্র বিলায়,যাকাত মিলায়, নাম ঠিকানা ধরে।
সিয়াম আসে,পালিয়ে শেষে রাইয়ানে নেয় ঠাঁই,
ফিতরা-যাকাত, উপবাসের নিরর্থ ধাক্কায়।
এমন আজব দানের গজব! চাইনা হতে দাতা,
তোমার কাছে "হে রহমান " নিঃস্ব এ গ্রহীতা।
পাঠাও যাকে ক্ষুধার পাকে আমার দরজায়,
সবটা দিয়ে মন ভরাবার শক্তি যেন পাই।
নামাজ, রোজা, প্রাণের বোঝা, যা করেছো দান,
সব গুছিয়ে তোমায় দিয়ে, রিক্ত হলে প্রাণ,
সেদিন আমায় ডেকে নিও তোমার কাছাকাছি,
কদর রাতে সেই চাওয়াতে প্রাণ ডুবিয়ে আছি।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
২৭ এপ্রিল ২০২২