মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভুক্তভোগী ২ নারীর সংবাদ সম্মেলন

'৯৯৯' এ ফোন: ফরিদপুরে দুই রোযাদার নারীকে পুলিশের হয়রানির অভিযোগ

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২২
'৯৯৯' এ ফোন: ফরিদপুরে দুই রোযাদার নারীকে পুলিশের হয়রানির অভিযোগ

এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি :


হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুলিশ নিয়ে বিবাদমান জমিতে ইমারত নির্মাণের প্রতিবাদ করতে যেয়ে পুলিশের হয়রানির শিকার হয়েছেন দুই নারী। তীব্র গরমে রোযাদার দুজন নারীকে পুলিশের গাড়িতে আড়াই ঘন্টা বসিয়ে এরপর থানায় সুন্দর আপ্যায়নের কথা বলে আটকে রাখা হয়েছে আরো আড়াই ঘন্টা। এরপর আর কোনদিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করা যাবেনা এই শর্তে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তাদের ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

 বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন ফরিদপুরের সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের সেকেন মোল্যার মেয়ে সাজেদা আক্তার মিনু (৪০) ও তার চাচী বৈশাখী বেগম (৩২)।

তবে পুলিশ বলছে, তারা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে আইনশৃঙ্খলার স্বার্থেই তাদের থানায় নিয়ে আসেন।
 
বৈশাখী বেগমের স্বামী ফজলু মোল্যা লিখিত বক্তব্যে জানান, চাঁদপুর মৌজার একখন্ড জমি নিয়ে তার সাথে বিরোধ রয়েছে একই গ্রামের সুনীল কুমার সাহা ও তার শরিকদের সাথে। ফরিদপুরের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে অবজারভেশন অনুযায়ী মুন্সেফ আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর যাতে ওই জমিতে বিবাদীরা জোর করে দখলে নিতে না পারে সেজন্য কোর্টে আবেদন করেন। এরপর হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিলের প্রেক্ষিতে নালিশী জমিতে স্থিতাবস্থা রাখার আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ২৪ এপ্রিল প্রতিপক্ষ সুনীল কুমার সাহার হয়ে কোতয়ালী থানার এসআই শংকর ও দুজন সাদা পোষাকের পুলিশের উপস্থিতিতে নালিশী জমিতে ইমারত নির্মাণের চেষ্টা শুরু হয়। এসময় বাড়িতে পুরুষদের অনুপস্থিতিতে মিনু বেগম ও বৈশাখী এসে প্রতিবাদ করলে তাদের প্রখর গরমে পাশের একটি গাছতলায় প্রথমে আধঘন্টা দাড় করিয়ে রাখা হয়। এরপর ওসি সাহেব ডেকেছেন একথা জানিয়ে তাদের পুলিশের গাড়িতে উঠিয়ে গোয়ালচামটে পানি অবদা অফিসের সামনে এনে আধঘন্টা সেখানে অবস্থানের পর গাড়ি নিয়ে শহরের পূর্ব খাবাসপুর জোড়া ব্রিজের এক পাশে এসে আরো আধঘন্টা রেখে তারপর দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের থানায় নিয়ে যায়। আমাদের মনে এভাবে একটা ভয় ধরিয়ে দেয়া হয়।

‘আপনাদের সুন্দর আপ্যায়নের ব্যবস্থা আছে’ একথা বলে তাদের দুজনকে থানায় একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে আটকে রাখা হয়। মিনু বেগম বলেন, তীব্র গরমে ওই ঘরে একটি ফ্যান বন্ধ ছিলো। আমরা এসআই শংকরকে বারবার বলেছি আমরা রোযা। আমাদের কেনো থানায় নিয়ে এসেছেন? ওসি সাহেবের কাছে নিয়ে যান আমরা তার সাথে কথা বলবো। কিন্তু তিনি আমাদের কোন কথাতেই কর্ণপাত করেন নাই।

আপনাদের সুন্দর ইফতারির ব্যবস্থা করবো বলে তারা আমাদের ভয় দেখাতে থাকে। এরপর আমরা বারবার একথা বলতে থাকলে ইফতারির একটু আগে আমাদের থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

এব্যপারে কোতয়ালী থানার এসআই শংকরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে আমরা সেখানে যাই। পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বার্থে বিষয়টির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তাদের নির্দেশে ওই দুজনকে থানায় নিয়ে আসি। তাদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই শংকর বলেন, এটি আমার দেখার এখতিয়ার নয়। যদিও ওই দুই নারী কেনো সেখানে ইমারত নির্মাণে বাধা দিচ্ছে সে তথ্য তিনি জানতে চেয়েছিলেন বলে জানান।

এব্যাপারে কোতয়ালী থানার ওসি মো. আব্দুল জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওইদিন দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কথা ছিলো। এজন্য পুলিশ পাঠিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়।

এব্যাপারে অপর পক্ষের বক্তব্য জানতে তাপস কুমার সাহার মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অবশ্য এ ঘটনায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ভুক্তভোগিদেরই থানায় আটকে হয়রানীর ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল