দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও বড় বাজার পাটগাতী বাজার। করোনা ভাইরাসের কারণে গত দুই ঈদে প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি করে বেচা বিক্রি করেছেন এ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এবছর সরকারি কোনো বিধি নিষেধ না থাকায় লাভের আশায় লক্ষ লক্ষ টাকার মাল উঠিয়েছে তারা। ২৭ রমজান পার হলেও কাঙ্খিত বেচাকেনা নেই দোকানদারদের। তাদের দাবি ক্রেতা থাকলেও বেচাবিক্রি নেই।
সরেজমিনে পাটগাতি বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতাদের বেশ ভিড় থাকলেও বেচাবিক্রি কম। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে বিক্রেতারা নতুন নতুন ডিজাইনের থ্রিপিচ, সাড়ারা, গাড়ারা, ল্যাহেঙ্গা, শাড়ি, পাঞ্জাবি, সাজিয়ে রেখেছেন। ক্রেতাদের নতুন ডিজাইনের পোশাক দেখাতে ব্যস্ত বিক্রেতারা। শাড়ির দোকানের কর্মচারীরা ক্রেতাদের আকর্ষিত করতে নিজেরা শাড়ি পড়ে দেখাচ্ছেন। তবে অনেক ক্রেতা দামাদামি করে না কিনেই চলে যাচ্ছেন। এতে বেশ হতাশ ব্যবসায়ীরা। কাপড়ের দাম বাড়ায় কাঙ্খিত বেচাকেনা হচ্ছে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
মোল্লা মার্কেটের ব্যবসায়ী রিপন মুন্সী বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ঈদে ভালো ব্যবসা করতে না পারায় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে দোকানে অনেক নতুন ডিজাইনের পণ্য রাখা হয়েছে। ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও কাঙ্খিত বেচাকেনা নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে কাঙ্খিত বিক্রির ৪০ শতাংশ পণ্য বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
ব্যবসায়ী কামাল শেখ, সৈকত শেখ, শিবু সাহা, উজ্জল মন্ডল সহ অনেকে জানান, জামা কাপড় কিনতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। কাপড়ের দাম কিছুটা বাড়ায় অনেকে দামাদামি করে না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিটি দোকানেই লাখ লাখ টাকার নতুন নতুন পণ্য আনা হয়েছে। কিন্তু বেচাকেনা খুবই কম। এবছরের চেয়ে গত দুই বছর ঈদে আরো ভালো বেচা বিক্রি করেছি। আশা করি চাঁদ রাতে ভালো বেচাকেনা হবে।
পাটগাতী বাজারের দোকানী লাবনী আক্তার বলেন, ঈদ উপলক্ষে এবার ২৫-৩০ লাখ টাকার নতুন শাড়ি কাপড় এনেছি। কিন্তু বেচাকেনা খুবই কম। মূলত যারা গ্রামের বাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা করত তারা এখন গোপালগঞ্জ ও খুলনা থেকে কেনাকাটা করছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা এবার লাভের মুখ তো দেখবেই না উল্টো লোকসানে পরবে।
কেনাকাটা করতে আসা মিতা খানম জানান, প্রতিটি দোকানেই আকর্ষণীয় শাড়ি কাপড় রয়েছে। কিন্তু দাম খুবই বাড়তি। এসব শাড়ি কাপড় পছন্দ হলেও ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকায় না কিনেই ফিরে যেতে হচ্ছে।
পাটগাতী বাজারে বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম অপু বলেন, বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জেনেছি পর্যাপ্ত ক্রেতা থাকলেও বেচাকেনা নেই। টুঙ্গিপাড়ার পার্শ্ববর্তী চিতলমারী, নাজিরপুর, মোল্লাহাট থেকে ব্যাপক সংখ্যক ক্রেতারা পাটগাতী বাজারে কেনাকাটা করতে আসতো। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় তারা এখন বাগেরহাট-পিরোজপুর ও খুলনা থেকে কেনাকাটা করছে। এই কারণেই বিক্রেতারা কাঙ্খিত বেচাকেনা করতে পারছে না।
এমআই