মো: মঈন উদ্দিন রায়হান : ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল রাজিবপুর ইউনিয়নে রাতের আঁধারে অভিনব কায়দায় বাড়ির লোকজনকে অচেতন করে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরির এমন ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতারসহ টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত হলেন- ঈশ্বরগঞ্জের দত্তের ডাংরী এলাকার আবদুস ছত্তারের ছেলে সবুজ মিয়া (৩০), কাঁঠাল ডাংরী এলাকার ইস্রাফিল মিয়ার ছেলে রফিক মিয়া (৩০) এবং কাকনহাটি এলাকার কফিল উদ্দিনের ছেলে স্বর্ণকার শাহিন মিয়া (৪০)।
শনিবার বিকেলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ঘটনার শুরু ১০ জানুয়ারি রাতে। রাজিবপুর ইউনিয়নের রাজারামপুর গ্রামের চানু মেম্বারের বাড়ির লোকজন সন্ধ্যা নামতেই অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর রাত ১২টার দিকে কিছুটা হুঁশ ফিরলে তারা দেখতে পান দরজা খোলা, আলমারি-
ড্রয়ারের তালা ভাঙা। তিনটি কক্ষ থেকে লুটপাট করা হয়েছে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার।
ওই রাতেই একই কায়দায় লুটের ঘটনা ঘটে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ মাইজহাটি গ্রামের রোকন উদ্দিন ভূঁইয়ার বাড়িতে ও মগটুলা ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের নেসার উদ্দিনের বাড়িতে।
পরদিন ১১ জানুয়ারি বিল খেরুয়া গ্রামে ঘটে ফের একই ঘটনা। এদিন তারা হানা দেয় স্থানীয় এক ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল খায়ের ও এক কৃষক গোলাম মহিউদ্দিনের বাড়িতে। এরপর ১৪ জানুয়ারি মাইজহাটি এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বাবুলের বাড়িতে চলে লুটপাট, অচেতন করা হয় আক্রাম হোসেন নামের এক স্কুলশিক্ষকের পরিবারকেও। লুটপাট হওয়া প্রতিটি বাড়ির পাশেই ফেলে যাওয়া হতো লবণ, হলুদ, মরিচ ও ধনিয়ার গুঁড়া।
শাহ কামাল আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ১৬ জানুয়ারি চুরির মামলা করা হলে সেটির তদন্তভার আসে ডিবির কাছে। এরপর মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে জড়িত সবুজ ও রফিক নামের দুজনকে শুক্রবার গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির ঘটনা স্বীকার করেন। পরে তাদের কথামতো একটি ঘটনায় চোরাই কিছু স্বর্ণালংকার ও ২৫ হাজার টাকাসহ চোরাই মাল ক্রেতা শাহীন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ২ এপ্রিল রাতে তাদের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়।
আটকৃতরা চুরির ঘটনা স্বীকার করে আরো বলেন, প্রথমে সুবিধামতো বাড়ি বাছাই করত। তারপর ঘটনার আগের রাতে তারা ওই বাড়ির রান্নাঘরে ঢুকে লবণ ও বিভিন্ন মসলায় চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে রেখে যেত। পরদিন এসব মসলা দিয়ে রান্না করা খাবার খেয়ে রাাতে পরিবারের সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়তেন। এই সুযোগে চোরেরা ঘরে থাকা যাবতীয় টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে চলে যেত।
শনিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সময় জার্নাল/এমআই