নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ খুব তাড়াতাড়ি আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে। আপাতত সেটি ভারতের অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোলেও গতি বদলে বাংলাদেশের দিকে আসারও আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বিবিসি বাংলাকে জানাচ্ছেন, 'বর্তমানে সাগরের যে আবহাওয়া পরিস্থিতি, তাতে এটি আরো ঘনীভূত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এটির প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে।'
তিনি জানান, বঙ্গোপসাগর এই মুহূর্তে বিক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলের আবহাওয়াতেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এই ঝড়ের 'অশনি' নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা, বাংলায় যার অর্থ 'ক্ষুব্ধ বা বিপদ'।
আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ এটি উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে বলে আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
যে কারণে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে
ঝড়ে বর্তমান বাতাসের গতিবেগ উঠেছে ৮৯ কিলোমিটার পর্যন্ত। তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে সেটির বাতাসের গতিবেগ দমকা হাওয়াসহ ১২০ কিলোমিটার থেকে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
'অশনি' নামের এই ঘূর্ণিঝড়টি রোববার দুপুরে বাংলাদেশ থেকে বঙ্গোপসাগরে ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঝড়টি অবস্থান করছিল। সেখান থেকে ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই আরো শক্তি সঞ্চার করতে করতে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এভাবে সামনে এগিয়ে গেলে ভারতের ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে এগিয়ে যাবে।
কিন্তু ঝড়টির গতিপথে একটি বড় বাঁক রয়েছে, যার ফলে সেটি আরো সামনে এগিয়ে কিছুটা ঘুরে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসারও একটি আশঙ্কা রয়েছে বলে বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন। এ কারণে তারা ঝড়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশের ওপর এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করবে বলে পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদফতর।
ঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশের মেঘ আর বৃষ্টি বঙ্গোপসাগরের দিকে যাচ্ছে। যে কারণে আকাশ মেঘমুক্ত হয়ে তাপমাত্রা বেড়েছে। আগামী কয়ে কদিন এই অবস্থা চলতে পারে।
বাংলাদেশের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এনামুর রহমান ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ক একটি সভা শেষে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় হলে তা মোকাবেলার সব প্রস্তুতি তাদের আছে।
সময় জার্নার/এলআর