মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষীপ্ত জনতা, আহত সংখ্যা ৩

মঙ্গলবার, জুন ৭, ২০২২
জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষীপ্ত জনতা, আহত সংখ্যা ৩

ঢাকার জুরাইনে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতিকে আটকানোর পর কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ট্রাফিক পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এতে এক সার্জেন্টসহ পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে জুরাইন ট্রাফিক সিগন্যালে এ ঘটনা ঘটে। আহত তিন পুলিশ সদস্য হলেন সার্জেন্ট আলী হোসেন, ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপপরিদর্শক উৎপল চন্দ্র। উত্তেজিত জনতা কাচ দিয়ে আলী হোসেনের হাত কেটে দেন। তাঁর হাতে ২১টি সেলাই পড়েছে। আহত পুলিশ সদস্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জুরাইনের বাসিন্দা মিজানুর রহমান প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে প্রথম আলোকে জানান, সকালে এক ব্যক্তি স্ত্রীসহ মোটরসাইকেলে করে কোথাও যাচ্ছিলেন। তাঁর স্ত্রীর মাথায় হেলমেট ছিল না। এ সময় ট্রাফিকের একজন সার্জেন্ট মোটরসাইকেলটি থামান। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট নারীর গায়ে হাত তোলেন ও ওই দম্পতিকে পুলিশ বক্সের দিকে নিয়ে যান। তখনই এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁরা পুলিশ বক্স লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। তিনি পুলিশ বক্সের কাচের টুকরা রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। মিজানুর বলেন, পুলিশের চাঁদাবাজি নিয়ে স্থানীয় লোকজন বিরক্ত। মূলত তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আজ।

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ট্রাফিক পুলিশকে ‘বডিওরন’ ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরপরই ওই ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখেছেন তাঁরা। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এক ব্যক্তি একজন নারীকে নিয়ে উল্টো পথে বাইক চালিয়ে আসছিলেন। ওই নারীর মাথায় হেলমেট ছিল না। এ সময় এক ট্রাফিক কনস্টেবল বাইকসহ চালককে রাস্তার পাশে দাঁড়াতে বলেন। ট্রাফিক সার্জেন্ট তাঁর কাছ থেকে কাগজপত্র দেখতে চান।

পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষের একাধিক ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন। ভিডিওতে বাইকে থাকা ব্যক্তিকে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘প্রতিদিন মাস্তানি করেন, আজ আমি দেখাচ্ছি।’ এরপর তিনি উল্টো পুলিশ সার্জেন্টকে কাগজপত্র বের করতে বলেন। এ সময় চড়া গলায় সার্জেন্ট বলেন, তিনি পুলিশের পোশাক পরে আছেন, তাঁর হাতে ওয়াকিটকি রয়েছে। তাঁর অন্য কোনো পরিচয় দেওয়ার দরকার নেই। কথা-কাটাকাটির ফাঁকে হঠাৎ করে সঙ্গে থাকা নারী বলে ওঠেন, ‘আমার গায়ে হাত দিলেন কেন?’ এর পরপরই লোকজন জড়ো হতে থাকেন।ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম বলেছেন, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই নারীর গায়ে কাউকে হাত দিতে দেখা যায়নি।

একটি ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে বারবার বলতে শোনা যায়, তিনি আইনজীবী ও সাংবাদিক। জানা গেছে, বাইকটি চালাচ্ছিলেন বার্তা বিচিত্রা ডটকম নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশক মো. রনি। তাঁর স্ত্রী ইয়াছিন জাহান (নিশিতা) ওই সংবাদমাধ্যমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।স্থানীয় লোকজন যখন পুলিশের ওপর চড়াও হচ্ছিলেন, সে সময় মো. রনি ও তাঁর স্ত্রীকে ঘটনাস্থলের পাশের পুলিশ বক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ফেসবুকে লাইভ করেন রনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘বাংলাদেশের জনগণ দেখেন, যারা প্রত্যেকদিন জুরাইনে চাঁদাবাজি করে, চাঁদাবাজি করার সময় আমার সঙ্গে কথা হয়। আমার সঙ্গে অসদাচরণ করে। একপর্যায়ে আমাকে মারধর করে। কোন আইনে আছে মারধর করা যাবে? কেন আপনি মারলেন?’এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন তাঁর ছেঁড়া শার্টের কোনা তুলে দেখান। তখন রনি বলেন, ‘এটা তো জনগণ ছিঁড়েছে। আপনারা কিছু বলবেন? আমাকে শাবল দিয়ে জীবননাশের চেষ্টা করেছেন। (তিনি শাবলটি দেখান)। আমি ৯৯৯-এ ফোন করি। ওটি ব্যস্ত দেখায়। এই সেই শাবল, যা দিয়ে তারা আমার ওপর আঘাত করে। ট্রাফিকের কোন আইনে আছে? গাড়ির লাইসেন্স দেখানোর পর সে আমার থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। এই যে গাড়ির লাইসেন্স। টাকা দিতে অস্বীকার করি, তখন তারা আমাকে শাবল দিয়ে আঘাত করে। উত্তেজিত জনতা কীভাবে তাদের থানা ভাঙচুর করছে দেখেন।’ এ সময় ভিডিওতে ভাঙচুরের শব্দ শোনা যায়। তখন তিন পুলিশ সদস্য পুলিশ বক্সের এক কোনায় আশ্রয় নেন। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনায় প্রায় আধা ঘণ্টা ওই এলাকা দিয়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

এ ঘটনায় মো. রনিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে শ্যামপুর থানার ওসি মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন।



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল