নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন সুমন শিকদার মুসাকে ওমান থেকে দেশে আনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটে পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল তাকে নিয়ে দেশে পৌঁছান।
টিপু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও অভিযানের নেতৃত্বদানকারী গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান রিপন ওমান থেকে মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনার নেতৃত্ব দেন। তার সাথে আরো ছিলেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ সদরদফতরের এনসিবি বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দীন।
এডিসি শাহিদুর রহমান রিপন বলেন, ইন্টারপোলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশ দুবাই পুলিশের মাধ্যমে মুসাকে আটকের চেষ্টা শুরু করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুবাই থেকে ওমানে চলে যান তিনি। পরে ওমান পুলিশের মাধ্যমে মুসাকে শনাক্ত করে আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে দেশে ফেরত আনা হয়।
তিনি বলেন, আলোচিত এই হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন আদালতে ১৬৪ ধায়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে শুটার মাসুমের জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনায় মুসার নাম আসে।
গত ২৪ মার্চ রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জাহিদুল ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরের দিন ২৫ মার্চ দুপুরে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৮।
ওই সময় র্যাব বলেছিল, চাঁদাবাজি ও দরপত্র নিয়ে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব, রিয়াজুল হক মিল্কী হত্যার বদলা এবং বোঁচা বাবু হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ওমর ফারুকসহ স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। বাজেট ছিল ১৫ লাখ টাকা।
তদন্তকারীদের ভাষ্য, মুসা ‘রাজনীতি ও অপরাধজগতের মধ্যে যোগসূত্র’ হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ঢাকা ও দুবাইয়ের অপরাধজগতের মধ্যেও সংযোগের সমন্বয় করতেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন আগেই মুসা দুবাই চলে যান। হত্যা পরিকল্পনা এবং যাবতীয় নির্দেশনা সেখান থেকেই দেয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দুবাইয়ে বার্তা যায় ‘কাজ শেষ’। এরপর মুসা দুবাই থেকে ওমানে গেছেন বলে গত মাসেই সংবাদপত্রে খবর আসে।
সময় জার্নাল/এলআর