সময় জার্নাল ডেস্ক: প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস। অনাহারে, অর্ধাহারে দিন যাপন করেছেন। এখন পানি নামছে। বাড়িঘর ভেসে উঠছে। কিন্তু সব রেখে চলে আসা মানুষগুলো বাড়ি ফেরা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
উজানের ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলা।
এছাড়া শেষের ঢলে জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগরের মানুষ বাড়িঘর হারিয়েছেন। এর সংখ্যা হাজার হাজার হবে বলে জানিয়েছেন বন্যাদুর্গত এলাকার জনপ্রতিনিধিরা।
অনেক এলাকায় গ্রামের পর গ্রাম মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গোয়াইনঘাটের আসামপাড়া গ্রামের জুলহাসের ঢলে নদীতে তলিয়ে গেছে ঘর। এখন বসবাস করছেন অন্যের বাড়ি। কেউ আবার, পরিবার নিয়ে এক কাপড়ে নিরাপদে চলে এসেছিলেন। ফিরতে পারেননি। এরপর ঢল তলিয়ে নিয়েছে বাড়ি। এখন কোনো চিহ্নও নেই বাড়ির।
কারো ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। নতুন করে ঘর বানানোর মতো সামর্থ্য নেই তাদের। কারো ঘর থাকলেও ভেতরে আসবাবপত্র পানিতে ভেসে গেছে। গবাদিপশু কিছুই নেই। মাঠের বা ঘরের ধানও নেই। কী করবেন এখন? এমন বাস্তবতায় দিশাহারা সিলেটের বানভাসি কয়েক হাজার মানুষ।
চলছে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নিরূপণও। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে- সিলেট জেলার সিটি করপোরেশন আংশিক ও ১৩টি উপজেলার ৯৯টি ইউনিয়নই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২২ লাখ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
প্রায় ৩০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে প্রশাসনের তরফ থেকে প্রায় ১৭০০ টন চাল ও নগদ দুই কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বানভাসি মানুষকে ঘরে ফেরানো। সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- ‘সিলেটে বন্যায় যেসব মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের প্রকৃত তালিকা প্রস্তুতে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে উপজেলাগুলোতে তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আজকালের মধ্যে সেই তালিকাও আসবে। এরপর সেটি মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে।’
তিনি জানান- ‘আমরা আশা করি পুর্নবাসনের কাজটিও দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করতে পারবো। প্রধানমন্ত্রী সিলেটের বন্যার সার্বিক বিষয়টি দেখভাল করছেন। আমরা যখন যা আব্দার করছি, সবই পাচ্ছি।’ কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও লুসিকান্ত হাজং জানিয়েছেন- ‘জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা করছি। পুনর্বাসনের জন্য প্রকৃত ব্যক্তিদের তালিকা করা হচ্ছে। সেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
সময় জার্নাল/এলআর