নিজস্ব প্রতিনিধি: চামড়া সংরক্ষণের প্রধান উপকরণ লবণের দাম বৃদ্ধি এবং শ্রমিক সংকট ও মজুরি বাড়ায় খরচ বেশি পড়েছে। কোরবানির পশু জবাইয়ের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর চামড়ার দাম নিয়ে তেমন কোনো হা-হুতাশও ছিল না।
ট্যানারি মালিকদের কাছে জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের গত ১০ বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এ পরিমাণ টাকা বকেয়া পড়েছে। চামড়ার সুদিন ফিরিয়ে আনতে সরকারিভাবে চামড়া সংগ্রহ ও সরাসরি চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নওগাঁ শহরের গোস্তহাটির মোড় থেকে দক্ষিণে দুবলহাটী সড়ক। যা হাট-নওগাঁ নামে পরিচিত। এক সময় এ সড়কটি চামড়ায় প্রায় সারা বছরই জমজামট থাকতো। এক সময় হাট-নওগাঁর এ রাস্তা ‘চামড়া পট্টি’ নামে পরিচিত ছিল। রাস্তার দু’পাশে চামড়ার গুদাম ঘর ছিল। অনেক দূর পর্যন্ত বাতাসে সেই চামড়ার গন্ধ ভেসে আসতো।
সেই রাস্তা এখনো আছে। কিন্তু চামড়ার গুদাম ঘর নেই। সময়ের বিবর্তনে সেই ‘চামড়া পট্টি’ এখন বদল হয়েছে। ‘চামড়া পট্টি’ নাম থাকলেও গুদাম ঘরগুলো বিলীন হয়ে সেখানে এখন মুদি, সাইকেল, সিরামিক, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন স্টেশনারির দোকান গড়ে উঠেছে।
নওগাঁ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মো. মোমতাজ হোসেন বলেন, বর্তমানে এ সমিতির সদস্য ১০৭ জন। এরমধ্যে চামড়ার ব্যবসা করছেন ৩০-৩৫ জন। ট্যানারি মালিকদের দুটি সংগঠন থেকে জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বছরের পর বছর পাওনা টাকা না পাওয়ায় চামড়া ব্যবসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়িরা। দিন দিন চামড়া ব্যবসায়ীর সংখ্যা কমছে। চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে সারা বছর মনিটরিং টিম গঠন করে তদারকির মধ্যে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ বছর জেলায় প্রায় আড়াই লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। কোনো ধরনের চামড়া নষ্ট হয়নি। চামড়া একটি জাতীয় সম্পদ। আমরা প্রতি বছর কোরবানির চামড়া কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে সেগুলো ট্যানারি মালিকদের কাছে সরবরাহ করি। আমাদের সমিতির সদস্যরা গত ১০ বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা পাওনা হয়েছেন। পাওনা টাকা পরিশোধ না করার কারণে আমরা আমাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছি। তাই চামড়া ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সময় জার্নাল/এলআর