নিজস্ব প্রতিবেদক:
কবি ও প্রাবন্ধিক মিনার মনসুরের ৬২তম জন্মদিন আজ। ১৯৬০ সালের ২০ জুলাই তিনি চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক। বিনয়ী ও নির্লোভ, মুক্তবুদ্ধি ও অসাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শী এই মহৎ কবি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কৃতিত্বের সঙ্গে বিএ (সম্মান) এবং এমএ পাস করেছেন যথাক্রমে ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সালে। ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত তার প্রথম কবিতার বই ‘এই অবরুদ্ধ মানচিত্রে’ বাজেয়াপ্ত হয়। তারপর থেকে তার আর থেমে থাকতে হয়নি। কবিকে জন্মদিনের নিরন্তর শুভেচ্ছা।
১৯৭৫-৮৫ সালে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন বৈরী শক্তির বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই করে গেছেন মিনার মনসুর তাদের একজন। বিপুল জনপ্রিয়তার গুণে তিনি চাকসুর বার্ষিকী সম্পাদক নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত প্রথম সংকলন-গ্রন্থ ‘শেখ মুজিব একটি লাল গোলাপ’ (১৯৭৯; বাংলা একাডেমি, ২০২০) বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল। সে-সময় ‘এপিটাফ’ সম্পাদক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে তাঁর স্পর্ধিত তারুণ্য। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘এই অবরুদ্ধ মানচিত্রে’ (১৯৮৩) সামরিক সরকারের গাত্রদাহের কারণে নিষিদ্ধ হয়। বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পর্বে প্রথম হয়েও বিভাগে শিক্ষক হতে পারেননি পরিস্থিতির বৈরিতায়।
বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘হাসান হাফিজুর রহমান : বিমুখ প্রান্তরে অনির্বাণ বাতিঘর’ এবং ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত : জীবন ও কর্ম’ তাঁর অ্যাকাডেমিক গবেষণার যথার্থ দৃষ্টান্ত। অধ্যাপক অানিসুজ্জামানের নেতৃত্বে ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মারকগ্রন্থ’ ও ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের অাত্মকথা’ সম্পাদনা ও স্মরণানুষ্ঠান সংঘটন এবং ‘ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত’ জীবনীগ্রন্থ রচনা তাঁর স্বদেশনিষ্ঠার গভীর পরিচয়বহ। ‘কবি ও কবিতার সংগ্রাম’, ‘অামার পিতা নয়, পিতার অধিক’ প্রভৃতি তাঁর প্রাবন্ধিক সত্তার দীপ্র প্রকাশ। নির্মল ভাষা ও স্বচ্ছ চিন্তাধারা তাঁর গদ্যকে দিয়েছে স্বকীয়তা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কবিতাই মিনার মনসুরের পরমারাধ্য। ‘অনন্তের দিবারাত্রি’, ‘অবিনশ্বর মানুষ’, ‘মা এখন থেমে যাওয়া নদী’ প্রভৃতি তাঁর কাব্যসাধনার স্বর্ণফসল।
এমআই