অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুরঃ
আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেও বৃষ্টি না হওয়ায় লক্ষ্মীপুরে আমন ধানের চারা রোপনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। আমন চাষাবাদের ভরা মৌসুমেও কৃষকেরা ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। এদিকে প্রখর রোদে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সেচের পানি দিয়ে জমি আবাদ করতে হচ্ছে কৃষকদের।
দালাল বাজার, চররুহিতা, ভবানীগঞ্জসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানি না থাকায় বেশির ভাগ উঁচু জমি অনাবাদি হিসেবে পড়ে আছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের আমন বীজতলাগুলো প্রখর রোদে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে। এসব বীজতলার চারা রোপণ করলে পর্যাপ্ত ফল নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
কৃষকেরা জানান, আষাঢ় থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত আমন ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হয়। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় তাঁরা আমন চাষাবাদ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। মূলত বর্ষাকালে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে কৃষকেরা রোপা আমন চাষ করে থাকেন।
দালাল বাজার ইউনিয়নের মহাদেবপুর এলাকার কৃষক রাজীব হোসেন রাজু বলেন, গত বছরের এ সময়ে আমরা আমন ধানের চারা রোপন করতাম। কিন্তু এই বছর বৃষ্টি না হওয়ায় এখনো আমরা ধানের চারা রোপন করতে পারি নাই। চিন্তা করতেছি সেচের পানি দিয়ে ধানের চারা রোপন করবো।
চর মোহনা ইউনিয়নের কাজীরবিল এলাকার নাসির বিন সাফি বলেন, প্রতিবছর আমরা উঁচু জমি গুলো আগেভাগে রোপন করতাম। এই বছর বৃষ্টি না হওয়াতে উঁচু জমি তো দূরের কথা নিচু জমিও এখন পর্যন্ত রোপন করতে পারি নাই।
চররুহিতা ইউনিয়নের দাসপাড়া এলাকার তৈয়বা বেগম নামের এক কৃষাণী বলেন, সাধারণত বীজতলায় তৈরি হওয়া চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়। কিন্তু এই বছর সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় চারা রোপন করতে বিলম্ব হচ্ছি।
জেলা কৃষি অফিসার মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে ২২ হাজার ৬ শ ৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হবে। কিছু জমি আছে এক ফসলী। কিন্তু সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়ছে। তবে, খরচ বেশি হলেও সম্পূরক সেচ কৃষককে প্রদান করতেই হবে বীজতলাকে রক্ষা করতে হলে।
তিনি আরও জানান, যে হারে বৃক্ষের পরিমান কমছে বৃষ্টি সময়মত হওয়া কঠিন। নিম্নচাপ হলে সমুদ্রের পানি জলীয় বাষ্প আকারে ওপরে উঠে ঘনীভূত হয় এবং মেঘ তৈরি করে। সেই মেঘ বৃষ্টির পানি আকারে নেমে আসে। যেহেতু নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে না। তাই মেঘ জমে বৃষ্টি নামছে না। বৃষ্টিপাতের তুলনায় বাষ্পীকরন বেশি হলেই তখন খরার সৃষ্টি হয়। তবে, খরচ বেশি হলেও সম্পুরক সেচ কৃষককে প্রদান করতেই হবে বীজতলাকে রক্ষা করতে হলে। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ মাঠের কর্মকর্তাদের দিয়ে কৃষকদের কাছে এই বার্তা দিচ্ছে নিয়মিত।
এমআই