সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক: সরকারের নীতিনির্ধারকেরা জ্বালানিসংকটকে সাময়িক বললেও পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক এবং কত দিনে এ সংকট কাটবে, তা–ও কেউ বলতে পারেন না। গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে বক্তাদের কণ্ঠে এ হতাশা ও উৎকণ্ঠার কথাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে।ব্যবসায়ী নেতাদের বক্তব্য হলো, বৈশ্বিক জ্বালানিসংকটের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হলে পুরো অর্থনীতিকে স্থবির করে দিতে পারে। তাঁদের আশঙ্কা, জ্বালানি নিয়ে যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তা দীর্ঘদিন থাকবে। এ জন্য আগামী ১০ থেকে ২০ বছরে দেশের জ্বালানি চাহিদা ও সরবরাহ নিয়ে এখনই পরিকল্পনা নিতে হবে। কোনো কোনো খাতের ব্যবসায়ীরা লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন। দোকানমালিক সমিতির একজন নেতা দ্রুত দোকানপাটে লোডশেডিংয়ের অবসান চেয়েছেন।চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম থাকলে বিশৃঙ্খল অবস্থা এড়ানো কঠিন। পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে তুলনা করলে আওয়ামী লীগ আমলে বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বেড়েছে, এ কথা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু জ্বালানি খাতকে স্বাবলম্বী না করে আমদানি বাড়িয়ে সংকট উত্তরণের যে ভুল পথ ক্ষমতাসীনেরা বেছে নিয়েছিল, তারই খেসারত এখন দেশবাসীকে দিতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী যা বলেছেন, তাতে আশ্বস্ত হওয়া কঠিন। তিনি দেশবাসীকে সাশ্রয়ী হতে বলেছেন। দেশবাসী সাশ্রয়ী হয়েছে, সরকারও ভর্তুকি দিচ্ছে—এটা কঠিন বাস্তবতা। কিন্তু পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারের টেকসই পরিকল্পনা নেই। উপদেষ্টার মতে, ‘অনুসন্ধান করলে হয়তো কিছু গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। তবে এতে গ্যাসের উৎপাদন খুব বেশি বাড়বে বলে মনে হয় না। তাই এ নিয়ে বড় কোনো অঙ্গীকার করতে পারব না। কিন্তু যতটুকু সামর্থ্য আছে, সে অনুসারে অনুসন্ধানের চেষ্টা করে যাব।’ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, এত দিন তাঁরা অনুসন্ধানের চেষ্টা করলেন না কেন? এখন অনুসন্ধান করলে ফল পেতে অনেক সময় লাগবে। আগে গ্যাস অনুসন্ধান বা আহরণের চেষ্টা করলে পরিস্থিতি সহজেই সামাল দেওয়া যেত। জ্বালানিবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম যথার্থই বলেছেন, ‘আমাদের যে জ্বালানিসংকট চলছে, সেটা হওয়ার কথা ছিল না। গত ২২ বছরে গ্যাস অনুসন্ধান করেছি মাত্র ২৫টি। বলা যায়, নিজস্ব উৎসের গ্যাস খুঁজে পেতে আমরা তেমন কিছুই করিনি।’ সরকার এত দিন বিশেষজ্ঞদের কথা আমলে নেয়নি কতিপয় ব্যবসায়ীকে সুবিধা করে দিতে। সে সময় কম দামে তেল কিনে জনগণের কাছ থেকে বেশি দাম নিয়েছে। আবার রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে।সরকার ১০ বছরেও কেন রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারল না, সেই প্রশ্ন করা নিশ্চয়ই অযৌক্তিক হবে না। ভোক্তার কাছ থেকে নেওয়া গ্যাস বিলের একাংশ গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে ব্যয় করার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) তা না করে অন্য খাতে ব্যয় করেছে। এ অবিমৃশ্যকারিতার জবাব কী।দেশীয় শিল্পপণ্যের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। অন্যথায় অর্থনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হবে, যা সামাল দেওয়ার সামর্থ্য সরকারের নেই।এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল