নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী বুধবার (২৪ আগস্ট) থেকে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে ব্যাংকের লেনদেন কয়টা পর্যন্ত হবে তা জানানো হয়নি। এ সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (২২ আগস্ট) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বর্তমানে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হয়। আর ব্যাংকের অফিসের কার্যক্রম চলে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মিটিংয়ে ছিলেন। তিনি ঘোষণা দিয়ে দিচ্ছেন, ব্যাংকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
এসব সিদ্ধান্তের কারণে দুইটা সুবিধা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, একটা হলো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, আরেকটা ট্রাফিক জ্যামটাও কমবে।
এসব সিদ্ধান্ত কী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে? -জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয় তো হবেই। দেখা যাক, পরবর্তী অবস্থা উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত চলুক। সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক জ্যামটাও একটা ডিস্টিবিউট হয়ে যাবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং সরকারি অধীনস্ত অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে দু’দিন বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।
এছাড়া আমনের সেচের সুবিধার জন্য আগামী ১২-১৫ দিন গ্রামে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আজ ঢাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে দেওয়া এক গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিজনিত পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে রাত আটটার পর দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণীবিতান, কাঁচাবাজার বন্ধ রাখার জন্য গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব এলাকায় শৃঙ্খলা আনয়ন এবং ঢাকা শহর পরিচালনার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে জনস্বার্থে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে।
ক্যাটাগরি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়সীমার মধ্যে রয়েছে- সব দোকান পাট, শপিংমল, মার্কেট, বিপণীবিতান, কাঁচাবাজার, ব্যবসায়ীক-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রাত ৮ টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
এদিকে গত মাসে ব্যাংকগুলোকে তেল গ্যাস বিদ্যুতের ব্যয় কমানোর নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংকগুলোকে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেট্রল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস, লুব্রিকেন্ট বাবদ বরাদ্দ করা অর্থের ১০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে। আর আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) কমাতে হবে আরও ১০ শতাংশ খরচ। তাতে জ্বালানি বাবদ আগামী এক বছরে ব্যাংকগুলোকে ২০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে।
গত ৭ জুলাই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সারা দেশে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জুলাই মাসের ১৯ তারিখ থেকে সারা দেশে এলাকা ভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। যদিও বেশিরভাগ এলাকাতেই লোডশেডিং তার চেয়ে বেশি হচ্ছে।
জুলাই মাস থেকেই জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিসের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে গুঞ্জন ছিল। ২১ জুলাই এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যদি দেখি বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করে পুরো সময় অফিস করতে পারছি, তাহলে অফিসের সময় কমানোর দরকার নেই। আমরা পর্যালোচনার মধ্যে আছি কোনটা করলে ভালো হয়। এটি নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা করা হবে। তবে এখন আমাদের ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে চলছে।
সরকার সব কর্মকাণ্ডকে স্বাভাবিক গতিতে রেখেই সব কাজ চালিয়ে নিতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
এমআই