শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

৪১ দিনেও গ্রেফতার হয়নি মুলহোতা: বিচারের অপেক্ষায় মাহমুদা

মঙ্গলবার, আগস্ট ২৩, ২০২২
৪১ দিনেও গ্রেফতার হয়নি মুলহোতা: বিচারের অপেক্ষায় মাহমুদা

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আমাকে নির্যাতন করতো আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমার অপরাধ হলো আমি দেখতে কালো। আমি কালো হওয়ায় স্বামীও আমাকে নিয়ে সংসার করতে চায় না। শুনেছি সে ঢাকায় নাকি আরও বিয়ে করেছে। আমি সেখানে সংসার করার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। তারপরও আমাকে এসিড দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমি কালো হওয়ায় আমার শ্বশুর শাশুড়ি আমার গায়ে এসিড দিয়েছে। কালো হওয়া কি আমার অপরাধ? আমি স্বামীর সংসার করতে চাই।

এভাবেই কথাগুলো বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন এসিড আক্রান্তের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম। এদিকে ঘটনার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও ওই ঘটনার প্রধান আসামী তার শ্বশুর আতোয়ার রহমান এখনো গ্রেফতার না হওয়ার অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন ওই গৃহবধু ও তার পরিবার।

এসিড আক্রান্তের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম এখন তার শরীরে এসিডের ক্ষত নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বাবার বাড়িতে। তবে পুলিশ বলছে আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের কেতকীবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে মাহমুদা বেগমের সাথে প্রায় ৪ বছর পূর্বে টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকুড়ি গ্রামের আতোয়ার রহমানের পূত্র হামিদুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী হামিদুল শ্বশুর আতোয়ার শ্বাশুরী হামিদাসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদা বেগমকে কারনে অকারনে নির্যাতনসহ তালাকের হুমকি দিয়ে আসছে। 

গত ১৩ জুলাই রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্বশুর আতোয়ার রহমান ও শ্বাশুরী হামিদা বেগমসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদা বেগমের গায়ে এসিড ঢেলে দেয়। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে মাহমুদা বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে হাতীবান্ধা হাসপাতাল পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় পরের দিন ১৪ জুলাই ওই গৃহবধু মাহমুদা বেগমের বাবা আব্দুল মালেক বাদি হয়ে হাতীবান্ধা থানায় ৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আছিয়া বেগম নামে ওই গৃহবধুর এক ননদকে আটক করলেও ঘটনার ৪১ দিন অতিবাহিত হলেও প্রধান আসামী শ্বশুর আতোয়ার রহমানকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে মামলার বাদিসহ নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। 

সড়েজমিনে ওই গৃহবধুর শ্বশুরবাড়ি গেন্দুকুড়ি এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজন জানান, বিয়ের পর থেকে কারনে অকারনে শ্বশুর আতোয়ার ও শ্বাশুরী হামিদা তাদের পূত্রবধু মাহমুদাকে নির্যাতন করে। নানা অজুহাতে স্বামী হামিদুল প্রায় সময় বাহিরে থাকে। ওই গৃহবধুকে প্রতিবেশী কারো সাথে কথা বলতে দিত না। কোন প্রতিবেশীর সাথে কথা বললে তার উপর চলতো অমানুষিক নির্যাতন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধু মাহমুদা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আমাকে নির্যাতন করতো আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আমার প্রধান অপরাধ হলো আমি দেখতে কালো। আমি কালো হওয়ায় আমার স্বামীও আমাকে নিয়ে সংসার করবে না। শুনেছি সে ঢাকায় নাকি আরও বিয়ে করেছে। আমি সেখানে সংসার করার জন্য অনেক অত্যাচার সহ্য করে ছিলাম। সর্বশেষ তারা আমাকে এসিড দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। আমি এর ন্যায় বিচার দাবী করছি।

তবে ওই গৃহবধুর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবী, নিজের গাঁেয় নিজে এসিড দিয়ে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তারা যড়ষন্ত্রের শিকার। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক আঙ্গুর মিয়া জানান, এ মামলার একজন এজাহারভুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম জানান, এ ঘটনার বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধান আসামীসহ সকল আসামীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরন করতে পারবো।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল