শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রোভাইডারের (সিএইচসিপি) উপর হামলাকারী সেই যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন জেলার সিএইচসিপিরা।
শনিবার(২৭ আগস্ট) বিকেলে লালমনিরহাট শহরের প্রাণ কেন্দ্র মিশন মোড়ে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা।
এর আগে শনিবার (২০ আগস্ট) সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাশিপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনে ঘটে এ ঘটনা।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের নছিয়ত উল্লার ছেলে। তিনি সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন সম্পাদক এবং কাশিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী।
ভুক্তভোগী রিতা আক্তার লালমনিরহাট পৌরসভার সাপ্টানা উচাটারী এলাকার ইসরাফিলের স্ত্রী।
জানা গেছে, সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাশিপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে চাকরি করেন রিতা আক্তার।
চাকুরির সুবাদে প্রতিদিন কাশিপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে তাকে যেতে হয়। কর্মস্থলে যাওয়া-আসার এবং তার কর্মস্থলে গিয়েও ইপটিজিং করতেন যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ। বিষয়টি নিয়ে শালিস বৈঠক করে ওই যুবলীগ নেতাকে আচরন সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তার এমন কর্মকাণ্ড ঠিক না করে বরং ওই নারীর ওপরে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
পরে শনিবার(২০ আগস্ট) রিতা আক্তার কর্মস্থলে গেলে একটি লোহার রড নিয়ে তার অফিসে গিয়ে পুনরায় কু-প্রস্তাব দেন ওই যুবলীগ নেতা। সেটি প্রত্যক্ষান করায় জোর জরদস্তি করে শাড়ি টেনে-হেচরে শ্লীলতাহানী করেন তিনি। এতে রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে মারধর শুরু করেন। পরে রিতা আক্তার চিৎকার করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতে রিতা আক্তার বাদি হয়ে যুবলীগ নেতা আবুল কালামের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্ত ওই যুবলীগ নেতা। এখন অভিযোগ তুলে নিতে বাদির পরিবারকে হুমকী দিচ্ছেন বলেও জানান রিতা আক্তার।
মামলা দায়ের করার সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত যুগলীগ নেতাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদকে দ্রুত গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে শহরের মিশন মোড়ে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন জেলার সিএইচসিপিরা। তাদের মানববন্ধনে একাত্বতা ঘোষনা করেন রিতা আক্তারের পরিবার ও এলাকাবাসী।
মাববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিএইচসিপি অ্যাসোশিয়েশনের আদিতমারী উপজেলা সভাপতি আসাদুজ্জামান, সদর উপজেলা সভাপতি মিজানুর রহমান, সম্পাদক প্রিতিলতা রায়, সিএইচসিপি জয়দেব, বিপ্লব কুমার, সুবর্না আক্তার, শাহানাজ বেগম, নাসিমা বেগম, সালমা বেগম ও আহত সিএইচসিপি রিতা আক্তারের স্বামী ইসরাফিল প্রমুখ।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এমআই