নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘুরে ফিরে ছোট ছেলে শাওনকে খুজছেন মা ফরিদা বেগম। সন্তান হারানোর শোকে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি। শাওনের মায়ের বিলাপে ফতুল্লার নবীনগরের বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।
শুক্রবার সকালে নিহত শাওনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। ছেলের শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা ফরিদা বেগম। স্বজনদের মধ্যেও চলছে আহাজারি। তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন আশপাশের প্রতিবেশীরা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিহত শাওনের বাড়িতে আসলে আরো বেদনাবিধুর পরিবেশে সৃষ্টি হয়। সবার চোখে পানি। তিনি শাওনের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। এ সময় দোয়া ও মোনাজাত করেন মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
শুক্রবার সকালে ফতুল্লার নবীনগরে শাওনের বাড়িতে গেলে কথা হয় তার ভাই ফরহাদের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমরা তিন ভাই এক বোন ছিলাম। শাওন সবার ছোট। তাই সে সবার আদরের ছিল। তাকে হারিয়ে মা পাগল হয়ে গেছে। কাল থেকেই বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন।’
ফরহাদ আরো বলেন, ‘আমি এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদের জানা ছিল না যে শাওন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। কাল ছবি দেখার পর জানতে পারলাম সে যুবদল করে।’
শাওনের বড় ভাই মিলন জানান ‘আমরা জানতাম না সে রাজনীতি করত কিনা। আমার ভাইকে হত্যার বিচার চাই।’
শাওনের মামা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘একই পরিবারে চারটি শোক বইতে হচ্ছে বোন ফরিদাকে। কিছুদিন আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। তার আগে এক মেয়েকে হারিয়েছেন। এরপর এক ছেলেকে হারান। সবশেষে শাওনকে হারিয়েছেন। এত শোক কিভাবে সইতে পারে একজন মানুষ!’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) বড় ভাই মিলন প্রধান ও মামা মোতাহার হোসেনের কাছে শাওনের লাশ হস্তান্তর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শাওনের লাশ বাড়িতে আনা হয়। রাত দেড়টার দিকে নবীনগর শাহওয়ার আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে নবীনগর করবস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে শাওনকে যুবদল নয় যুবলীগ কর্মী দাবি করে তার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা সেখানে অবস্থান নেন। বিপরীতে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিতে চাইলে তাদের বাধা দেয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
সময় জার্নাল/এলআর