আজাহারুল ইসলাম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসির কার্যালয়ে একান্ত সচিবের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বাদী হয়ে টিটো মিজান, রাসেল জোয়ার্দ্দারসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোড-১৮৬০ এর ১৪৩, ৪৪৭, ৩৪২, ১৮৬, ৪২৭ এবং ৫০৬ ধারায় ইবি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ০৬। মঙ্গলবার থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননূর জায়েদ বিপ্লব।
এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন আহ্বায়ক ও ট্রোজারার দফতরের উপ-পরিচালক জাহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন, ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরিন, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আসাদুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম।
রেজিস্ট্রার দফতর জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় গত রবিবার ভূক্তভোগী ভিসির একান্ত সচিব আইয়ূব আলী (পিএস-১) ও মনিরুজ্জামান মোল্লার (পিএস-২) লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এ মামলা করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার অভিযোগকারাীরা দাফতরিক কাজ করার সময় হামলার শিকার হন। অস্থায়ী চাকরিজীবি পরিষদের সভাপতি টিটো মিজান, সাধারণ সম্পাদক রাসেল জোয়ার্দারের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন বহিরাগত এ হামলা করেন। একইসাথে আইয়ূবের কক্ষ ভাঙচুর, গুরুত্বপূর্ণ নথি তছনছ, শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন। দীর্ঘদিন ধরে অভিযুক্তরা স্থায়ী চাকরির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। তারই জের ধরে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তারা।
এসময় উপাচার্যের একান্ত সচিবের বিরুদ্ধে বিএনপি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন। এরপর বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো নিয়োগ বোর্ড হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা। হামলাকারীরা নিজেদের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী দাবি করেন। হামলার পরের দুইদিন তারা ক্যাম্পাসে তাদের শোডাউন দিতে দেখা যায়। হামলাকারীদের দাবি, ভিসির একান্ত সচিব তাদের ফাইল আটকে রাখার কারণে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তবে তারা হামলার বিষয় অস্বীকার করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ভাঙচুর হওয়া কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও এখন পর্যন্ত ফুটেজ মেলেনি। কক্ষটিতে সিসিটিভি ক্যামেরা সচল থাকলেও হার্ডডিস্ক অচল ছিল। এছাড়া উপাচার্যের কক্ষে ক্যামেরা সচল থাকলেও গত ৬ এপ্রিলের পর থেকে ফুটেজ মিলেনি। সহকারী প্রক্টর ড. শাহেদ আহমেদ বলেন, যে কক্ষে হামলা হয়েছে সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক থাকলেও হার্ডডিস্ক ইরোর (যান্ত্রিক ত্রুটি) দেখাচ্ছে। ভিসি স্যারের রুমেও গত ৫/৬ এপ্রিলের পর কোনো ফুটেজ নেই। কেউ ইচ্ছা করে ক্যামেরা বন্ধ রাখতে পারে। মূলত আইসিটি সেলই ক্যামেরার দেখভাল করে।
আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর আহসান উল আম্বিয়া বলেন, আইসিটি সেলের আশেপাশের কিছু ক্যামেরা ব্যতীত বাকিগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ক্যামেরাগুলো স্ব-স্ব অফিস নিয়ন্ত্রণ করে। সিসিটিভি ক্যামেরা অচলের ব্যাপারে আমাদের দায় নেই। সমস্যা হলে আমাদের জানালে ঠিক করে দিয়ে আসি।
এমআই