বুধবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
খালেদ হোসেন টাপু, রামু:
আসন্ন হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে রামুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা। এই উৎসবকে ঘিরে পূজার বাড়তি আকর্ষণীয় করে তুলতে পূজা মন্ডপ সহ হিন্দু পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এবার দেবী দুর্গার আগমন ঘটবে গজে করে এবং গমন করবেন নৌকায় করে।
সরেজমিন ঘুরে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততার চিত্র দেখা গেছে। প্রতিমা শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে একেকটি প্রতিমা। অতি ভালোবাসায় তৈরি করা হচ্ছে দুর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, লক্ষ্মী, গণেশ, অসুর ও শিবের মূর্তি। ইতিমধ্যে প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে দেবীর মূর্তি নির্মাণের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
প্রতিমা শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে একেকটি প্রতিমা। অতি ভালোবাসায় তৈরি করা হচ্ছে দুর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, লক্ষ্মী, গণেশ,সিংহ, অসুর ও শিবের মূর্তি। ইতিমধ্যে প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে দেবীর মূর্তি নির্মাণের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
রামু উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির তথ্য মতে, এবারে রামু উপজেলায় ৩২টি মণ্ডপে পূজা হবে। তবে তার মধ্যে ১০টি হবে ঘট পূজা।
কথা হয় রামু সার্বজনীন কালী মন্দিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকা উখিয়ার কৃতি সন্তান মিঠুন দাস ( ৩৮)এর সঙ্গে। তিনি বলেন, এ বছর রামুতে ১৮ টি প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি। একটা প্রতিমা তৈরির জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে থাকি। এবারে সর্বোচ্চ অর্ডার নিয়েছি রামু সার্বজনীন কালি মন্দিরের প্রতিমা সেটটি ৬৮ হাজার টাকা । আমরা চারজন একসঙ্গে কাজ করছি। একটি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে কমপক্ষে ১০ দিন। তবে একবারে একটি প্রতিমা তৈরি করা যায় না। কারণ কাদামাটি না শুকালে রং এর কাজ কারা যায় না।
তিনি আরও বলেন, প্রতিমা তৈরিতে এঁটেল ও বেলে মাটি ছাড়াও বাঁশ-খড়, ধানের কুঁড়া, দড়ি, লোহা, পাট, কাঠ, রং, বিভিন্ন রঙের সিট ও শাড়ি-কাপড়ের প্রয়োজন হয়।
রামু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন মল্লিক বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গা পূজা। প্রতি বছরের মতো এবারও এ উৎসবটি জাঁকজমকভাবে রামুতে উদ্যাপন করা হবে। তিনি আরও বলেন, এবারে রামুতে মোট ৩২টি মন্ডপ রয়েছে। তন্মধ্যে ১০টি ঘটপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
রামু সার্বজনীন কালী মন্দির পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুপন ধর বলেন, দুর্গাদেবীকে বরণ করে নিতে আমাদের মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জার কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, গত বারের চেয়ে এ বছর প্রতিমা তৈরির খরচ বেশি হচ্ছে।
কথা হয় রামু উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সদ্বীপ শর্মা সঙ্গে। তিনি আরও বলেন, ১লা অক্টোবর থেকে পরোদমে শারদীয় দূর্গোৎসব শুরু হবে এবং ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দূর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। তিনি নির্বিঘ্নে পূজা পালন করতে প্রশাসন থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এর ট্রাস্টি বাবুল শর্মা জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির তীর্থভূমি হচ্ছে রামু। প্রতিবছর আমরা রামুতে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয়া দুর্গোৎসব পালন করে আসছি। রামুতে সকল পূজা মন্ডপ গুলোতে সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ করা হয়েছে তারা সার্বিক নিরাপত্তার দেয়ার বিষয়ে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে।
রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পূজা শুরু থেকে দেবী বিসর্জন পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী টিমসহ প্রশাসনিক নজরদারি সার্বক্ষণিক থাকবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপের জন্য টহল পুলিশ এবং পূজা মণ্ডপগুলোর জন্য মোবাইল টিম থাকবে। সার্বক্ষণিক টহল পুলিশ ব্যবস্থাও জোরদার করা হবে।
এদিকে ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সকল হিন্দু নেতাদেরকে নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এমআই