ওয়াজেদুল হক, মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রাম থেকে একটি এনজিও অফিসের এক অফিস সহায়ক নিখোঁজ হয়েছেন। পরিবারের আশংকা তাকে গুম অথবা খুন করা হয়ছে। ওই অফিস সহায়কের নাম হৃদয়। তিনি একই উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের মিন্টু আলীর ছেলে। ‘আশা’ এনজিও’র বাওট শাখায় কর্মরত ছিলেন তিনি। শনিবার বিকেল থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
পরিবারের সদস্য এবং এলাকাবাসী তার খোঁজে আশা অফিসে গেলে অফিসের বিভিন্ন কক্ষে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখতে পান তারা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা এনজিওর ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। হৃদয়কে গুম করা হয়েছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের মাঝে।
হৃদয়ের স্ত্রী কণা খাতুন জানান, শনিবার দুুপুরে হৃদয় ও তার পরিবারের সদস্যরা একসাথে বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে। বিকেলে বাবার কাছে জমিতে সার পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। গেলো দুইদিন ধরে তিনি অফিসে নাইট ডিউটি পালন করছিলেন। শনিবার সকালে বাড়িতে এলেও বিকেলে বাড়ি থেকে বের হবার পর তার আর কোন খোঁজ মেলেনি। রোববার সকালে বাসায় না আসায় পরিবারের সদস্যরা-অফিসে হৃদয়কে খুঁজতে যায়। সেখানে বিভিন্ন কক্ষে রক্তের ছাপ দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেয়। পরে স্থানীয়রা সেখানে এসে হৃদয়ের খোঁজ জানতে চায়। কিন্তু কোন সদুত্তোর না পেয়ে স্থানীয় জনতা
অফিসের ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামকে গণপিটুনি শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
হৃদয়ের বাবা মিন্টু আলী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে অফিসের ব্যবস্থাপকের সাথে তার ছেলের ঝামেলা চলছিলো। ছেলের দাবি,
ব্যবস্থাপকের সাথে ঐ অফিসের এক নারী কর্মীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। তার সমস্ত তথ্য তার কাছে রয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থাপক তার ছেলেকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল।
এদিকে হৃদয়ের বাড়ি থেকে তার হাতে লেখা একটি কাগজ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছে, ঐ অফিসের নারী কর্মীর সাথে ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তার পুরোটায় সে জানে। তার ভিডিও এবং বেশ কিছু তথ্য উল্লেখ করে আশা এনজিওর জিএম বরাবার একটি লিখিত অভিযোগ লিখে রেখেছিলেন হৃদয়। সেটি তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
গাংনী তানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গাংনী থানা পুলিশের একটি দল। ব্যবস্থাপককে আটক দেখিয়ে জিজ্ঞাসবাদ করা হচ্ছে। রিদয়কে হত্যা করা হয়েছে না সে নিজে আত্মগোপনে রয়েছে সেটি খুজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। হৃদয়কে পাওয়া গেলে আসল রহস্যা উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে।
এমআই