নিজস্ব প্রতিবেদক:
দ্রোহ ও ভালবাসার কবি হেলাল হাফিজের ৭৫তম জন্মদিন ৭ অক্টোবর, শুক্রবার। ১৯৪৮ সালের আজকের এই দিনে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে নিজ শহরেই। ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে একই বছর কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।
কবি হেলাল হাফিজের লেখালেখির সূচনা ঘটে ষাটের দশকের উত্তাল সময়ে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। ‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ কালজয়ী কবিতার এ লাইন দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’। ২৬ বছর পর ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’।
চার বছর পর আগামী ডিসেম্বরে যুগপৎ ঢাকা ও কলকাতা থেকে প্রকাশ হচ্ছে ৩৪টি কবিতা নিয়ে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’। ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান কবি হেলাল হাফিজ।
কবি প্রথম জীবনে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসবে বেছে নিয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন দৈনিক পূর্বদেশে। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। পূর্বদেশ বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে হেলাল হাফিজ দৈনিক দেশ পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে যোগ দান করেন। দৈনিক যুগান্তরের ফিচার সম্পাদক ছিলেন তিনি।
কবিতায় অসামান্য অবদানের স্মারক হিসেবে হেলাল হাফিজকে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। এ ছাড়াও তিনি পেয়েছেন- যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোনা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা।
৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে একটি আনন্দ সন্ধ্যা ও কবির কবিতা নিয়ে রচিত 'ফুল ও ফুলকি' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হবে বিকাল ৫টায় ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৫ম তলায়। বইটি লিখেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি আবৃত্তি হবে কবির কবিতা।
অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিকগণ উপস্থিত থাকবেন।
এমআই