খালেদ হোসেন টাপু, রামু প্রতিনিধি:
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্নিমা উপলক্ষে কক্সবাজারের রামুতে দু'দিন ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা করা হয় এবং ফানুস ও কল্প-জাহাজ তৈরী কাজওসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
মহামতি গৌতম বুদ্ধ নির্বাণ লাভের পর আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাস শেষে প্রবারণা পালন করেন। সেই থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা বর্ষাবাস শেষে দিনটি পালন করে আসছেন। আত্মশুদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের আয়োজন হলো প্রবারণা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রামু বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসা উৎসবকে ঘিরে দ্বীপ শ্রীকুল, উখিয়ারঘোনা, জাদিপাড়া, হাইটুপি, শ্রীকুল, মেরংলোয়া, হাজারীকুল, নাশিকুল, পূর্বরাজারকুল, উত্তর মিঠাছড়িসহ অন্তত ৩০টি বৌদ্ধ পল্লীতে মহা আনন্দ বিরাজ করছে।
এ বছর উপজেলার মেরংলোয়া কেন্দ্রীয় সীমা বিহার, রামুর উত্তর মিঠাছড়ি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের ১০০ ফুট বুদ্ধ মুর্তি,
রামু মৈত্রী বিহার, চেরাংঘাটা বড় ক্যাং, লামার পাড়া ক্যাং, প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার, হাজারীকুল বোধিরত্ন বিহার, রামকোট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার, জাদিপাড়া আর্য্যবংশ বৌদ্ধ বিহার, উখিয়ারঘোনা জেতবন বিহার, উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার, পূর্ব রাজারকুল বৌদ্ধ বিহার, উত্তর ফতেখাঁরকুল বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহার, শ্রীকুল রাখাইন বৌদ্ধবিহার, লাং চিং, সাদাচিং,মধ্যম মেরংলোয়া শান্তির দূত বিহার, পশ্চিম মেরংলোয়া প্রজ্ঞামিত্র বিহার, পূর্বদীপ শ্রীকুল বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
বৌদ্ধ নেতারা জানান, শুভ প্রবারনা পূর্ণিমা উপলক্ষে রবিবার (৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভিক্ষু সংঘের প্রাতঃরাশ, প্রভাতফেরি, মঙ্গলসূত্র পাঠ, বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ, মহাসংঘদান,অতিথি ভোজন, ভিক্ষু সংঘকে পিণ্ডদান, অতিথি আপ্যায়ন, পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, প্রদীপ পূজা, বিশ্বশান্তি কামনায় সম্মিলিত প্রার্থনা, বুদ্ধকীর্তন, আলোকসজ্জা, ফানুস ওড়ানো প্রভৃতি।
রামু কেন্দ্রীয় প্রবারণা ও জাহাজ ভাসা উৎসব উদ্যাপন পরিষদ'২২ এর সভাপতি অর্পন বড়ুয়া জানান, সোমবার (১০ অক্টোবর ) দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ, নব সৃজনী খেলাঘর আসরের উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অতিথি বরণ, কল্প- জাহাজ ভাসা উৎসব শুভ উদ্বোধন, আলোচনা সভা, বিকাল কল্প- জাহাজ নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের সম্মাননা প্রদান, ফানুস উত্তোলন, নদীতে ভাসমান প্রদীপ প্রজ্বলন ও বিশ্বশান্তির জন্য প্রার্থনা।
এদিকে রামু থানা অফিসার্স ইনচার্জ আনোয়ারুল হোসাইন জানান, শুভ প্রবারনা পূর্ণিমা উপলক্ষে ২ দিন ব্যাপী ধর্মীয় কর্মসূচী গুলো সফল করতে ইতিমধ্যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময় হয়েছে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। বিশেষ করে কর্মসূচি দ্বিতীয় দিন সোমবার রামু বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসা উৎসবে বিপুল সংখ্যক পুলিশ জোরদার করা হবে।
সময় জার্নাল/এলআর