শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

১০১ জনের চলে যাওয়াটা খুব সহজ ছিলোনা

শুক্রবার, এপ্রিল ১৬, ২০২১
১০১ জনের চলে যাওয়াটা খুব সহজ ছিলোনা

ডাঃ আহমেদ জোবায়ের :

আজ করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হলো ১০১ জনের।

১০১ জন তাদের পরিবার, সন্তান, আপনজন, প্রিয় জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন আল্লাহর সান্নিধ্যে।

এই ১০১ জনের পরিবার জানে কতটা ভারী আপনজনকে হারানো।

১০১ জন কারো না কারো প্রিয় ছিলেন।

বাঁচার অনুপ্রেরণা ছিলেন।অবলম্বন ছিলেন।

বড়ই মায়ার মানুষ ছিলেন কারো না কারো কাছে।
সাদা কাফনে মুড়িয়ে গেলে যে আর রঙ্গিন পোশাকে ফেরা যায়না- তা শুধু এই ১০১ জনের পরিবার আজ উপলব্ধি করছেন।

কারো মা চলে গেছেন, কারো বাবা।

কারো সন্তান, কারো প্রিয়জন।

আর ফিরবেন না কোনদিন চিরচেনা জগতে।

আর কখনো তাদের দেখা যাবেনা মানুষের নগরীতে।

১০১ জনের চলে যাওয়াটা খুব সহজ ছিলোনা।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে অদৃশ্য অনুজীবের তান্ডব নিজ শরীরে সহ্য করার যন্ত্রনা আপনাদের বোধগম্যতার অনেক বাহিরে।

পৃথিবীতে এত অক্সিজেন।

একদিন এই ১০১ জনও বুক ভরে নির্মল অক্সিজেন নিজ বুকে টেনে নিয়েছেন।

কিন্ত সেই অক্সিজেন ফুসফুসে না যাওয়ার পাহাড়সম চাপ কখনো বুঝবেন না যদিনা নিজ নাকে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা না লাগে।

শিরায় শিরায় এত এন্টিবায়োটিক, এত এন্টিভাইরাল, এত স্যালাইন এত কিছু, নাভীর পাশে দুইবেলা এনক্সাপেরিন নেবার যন্ত্রনা শুধু তারাই বুঝবেন যারা এর ভেতর দিয়ে গেছেন।

খরচের হিসেব না হয় বাদই দিলাম।

এই অনুজীবের তান্ডবে কত পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে, জমানো টাকা সব শেষ হয়ে গিয়েছে,ধার দেনায় কত পরিবার দিশেহারা আগামী দিনের চিন্তায় তা বুঝার মত সেন্স আপনার হয়নি।

আজ যদিও পাত্তা দিচ্ছেন না,বলছেন সরকার বিরোধী মত দমনে এই লকডাউন দিয়েছে, রাজনীতি ও কন্সপাইরেসি খুঁজে পান সব কিছুতে, কাল যখন নিজে রাস্তায় রাস্তায় এম্বুল্যান্স নিয়ে ঘুরেও চিকিৎসা পাবেন না, তখন এই কথাগুলো বলার শক্তি আর থাকবেনা।

নিজের ভেতর সেই সময়ে যে হাহাকার জন্মাবে, তা সইতেও পারবেন না,কইতেও পারবেন না।

আজ শুক্রবারে যতজন রোগী দেখছি তার ৮০ ভাগই সাস্পেক্টেড কোভিড পেশেন্ট।

কোভিড ১৯শে আক্রান্ত হলেই আপনি মরে যাবেন না।

একটা ভাইরাস রোগ যদিও প্রাণঘতী কিন্ত সবাই মরে যাবে না।

৮৫-৯০ ভাগ মানুষ বাসায় থেকেই সুস্থ হয়ে যাবেন সামান্য চিকিৎসায়।

কিন্ত আমাদের অসচেতনতা, অবহেলা ও উদাসীনতায় যারা মারা যাচ্ছেন, তারা কি আমাদের কেউ নয়?

আমাদের জীবনে পরিবারে সমাজে কি তাদের কোন অবদান নেই?

আপনি ফাও ঘুরাঘুরি করে, মাস্ক না পরে বাইরে থেকে যেই মরণঘাতী ভাইরাস নিয়ে ঘরে ফিরে নিজ বাবা মা, সিনিয়র সিটিজেনদের আক্রান্ত করে দিলেন এবং তা থেকে তারা দুনিয়া ছেড়ে গেলেন, এতে কি আপনার কোন দায় নেই?

নিজেকে খুনী মনে হবে না আপনার??

একটা বৈশ্বিক প্যান্ডেমিককে কুসংস্কার, ধর্মীয় গোড়ামি, রাজনীতি ও কন্সপাইরেসি দিয়ে মোকাবিলা করা যায় কি?

মাস্ক পরলে নামাজ হবেনা এমন ফতোয়াবাজির সময় কি এটা?

বেশি বেশি ওয়াজ মাহফিল হলে করোনা কমে যাবে এমন বক্তব্য দেওয়া কি মুফতির কাজ।

১লা রমজানে বাবা গেলেন, ২য় রমজানে মা।

সন্তানরা বিদেশে।

ফ্লাইট বন্ধ।

বাবা মায়ের কবরে এক মুঠ মাটি দেবার সময় ও সুযোগ যারা পাননি, তাদের হৃদয়ের তীব্র ক্ষতটা আপনি কোনদিন বুঝবেন না।

এখনো আপনি আক্রান্ত হননি।

এটা আল্লাহ এর অশেষ রহমত।

আজই সাবধান হউন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

মাস্ক পরুন।

ঘরে থাকুন। অযথা ঘুরাঘুরি বন্ধ করুন।

মুভমেন্ট পাস নিয়ে শিং মাছ কিনতে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করুন।

মানবিক আবেদন - আশেপাশের গরীব,অসহায়,দিনমজুর খেটে-খাওয়া মানুষের প্রতি আপনার মানবতা ও আন্তরিকতার হাত বাড়িয়ে দিন আপনার সামর্থ্য অনুসারে।

আতংকিত নয়, সচেতন হউন।



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল