সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক: আগস্টে রেকর্ড বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম। জুনে গ্যাসের দাম বেড়েছে । বাজারে নিত্যপণ্যের দাম চড়া। বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। এর মধ্যে দিনে-রাতে বিদ্যুৎ নিয়ে ভুগছে মানুষ। এখন প্রতিদিন চার থেকে পাঁচবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে ঢাকাতেই। ঢাকার বাইরে গ্রাম এলাকার পরিস্থিতি আরও খারাপ। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আলোচনায় দুশ্চিন্তায় আছে ভোক্তারা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশের মানুষ। সরকারি হিসাবে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকি আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে সব জিনিসের দাম আরও বেড়ে যাবে। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার কথা। এটি ঘোষণা করবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে প্রায় পাঁচ মাস আগে শুনানি করেছিল বিইআরসি। ওই সময়ে দাম বাড়ানোর তীব্র বিরোধিতা করেছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে খুচরা পর্যায়েও দাম বাড়াতে হবে। বাড়তি খরচের চাপ নিতে পারবেন না ভোক্তা। তাই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর অবস্থান থেকে সরকারও সরে এসেছে। এ অবস্থায় ভোক্তার স্বস্তির বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। তাই দাম না বাড়িয়ে ঘাটতি সমন্বয়ের দিকে যাচ্ছে বিইআরসি। বিইআরসি ও বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং বিদ্যুৎ খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে আগের বছরের চেয়ে ৭ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। এর জন্য বিদেশ থেকে চড়া দামে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা। কিন্তু গত জুলাই থেকে খোলাবাজারে এলএনজি কেনা পুরোপুরি বন্ধ আছে। জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও চাহিদামতো উৎপাদন হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জুলাই থেকে সারা দেশে চলছে লোডশেডিং। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের প্রভাবে চাহিদা কমায় তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানোর সুযোগ আছে। পিডিবির ৭ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি ধরে ২৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি হিসাব করেছিল বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। উৎপাদন উল্টো কমায় পিডিবির খরচ কমে যাচ্ছে। আর ঘাটতি পূরণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রেখেছে বিদ্যুৎ খাতে। বিইআরসির তিনজন কর্মকর্তা বলেছেন, এ ভর্তুকি দিয়েই পিডিবির ঘাটতি সমন্বয় করা যাবে। ফলে এখন আর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, দাম বাড়ানোর জন্যই বিদ্যুৎ-সংকট তৈরি করা হয়েছে বলে আলোচনা আছে। বিদ্যুৎ-গ্যাসের সংকটে উৎপাদন কমে আয় নিম্নমুখী। এর মধ্যে দাম বাড়ানো হলে ব্যবসা বন্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। কবে কার কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, সেই দিন গুনতে হচ্ছে। গত এক যুগে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময়ে পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। সর্বশেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চে কার্যকর হয়। গত জুনে গড়ে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয় গ্যাসের দাম। ৬ আগস্ট থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে সাড়ে ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ। এরপর এক মাসের মাথায় লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমানো হয় জ্বালানি তেলের দাম। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, জুলাইয়ের শুরু থেকেই দেশে লোডশেডিং চলছে। আগস্ট পর্যন্ত দিনে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে তুলনামূলক কমে এসেছিল লোডশেডিং। চলতি মাসে এটি আবার বেড়েছে। এখন দিনে আড়াই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ের মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ভোক্তারা মেনে নেবেন না বলে মনে করছে ক্যাব। সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম শামসুল বলেন, দাম বাড়ানোর পরও ভোক্তা গ্যাস পাচ্ছেন না।বিদ্যুতের উৎপাদন কমিয়ে ভর্তুকি সমন্বয় করা হচ্ছে। তাই দাম বাড়ানো হবে জুলুম। বিইআরসির বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ন্যায্যতা নিশ্চিত হওয়ার কথা। তারা নিশ্চয়ই মূল্যবৃদ্ধির দিকে যাবে না। এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল