খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের (হাজীরহাট ক্লাষ্টারের) স্কুল উন্নয়ন কর্মসূচীর (স্লিপ) টাকায় নিম্নমানের নামমাত্র কিছু উপকরণ কেনাকাটা করে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ক্লাষ্টার অফিসার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,২০২১-২০২২ অর্থ বছরের স্কুল উন্নয়ন কর্মসূচীর (স্লিপ) টাকায় নিম্নমানের কিছু উপকরণ নামমাত্র কেনাকাটা করে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেছে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শাখাওয়াত হোসেন ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। আর এসব কাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন ক্লাষ্টার অফিসার শাখাওয়াত হোসেন। এ সব অনিয়মের ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরিফা আখতার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
পুটিমারী ইউনিয়নের কালিকাপুর স্কুলে গিয়ে দেখা যায় স্লিপের প্লানে সততা ষ্টোরের বিপরীতে বরাদ্দ ধরা হয় ৫ হাজার টাকা। যা দিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রয় করবে খাতা,কলম,পেন্সিল,রাবারসহ বিভিন্ন উপকরণ। আর সেই উপকরণ শিক্ষকের অনুপস্থিতে শিক্ষার্থীরা নির্দ্রষ্টি মূল্যে ক্রয় করে সেই স্টোরের নিদ্রিষ্ট স্থানে টাকা রেখে চলে যাবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুদ্ধাচারণ শিখবে। কিন্তু সেই টাকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোন উপকরণ না কিনে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছে। স্কুলের সাইড ড্রাম বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয় ৮ হাজার টাকা। কিন্তু সেই ৮ হাজার টাকায় সাইড ড্রাম মেরামত না নতুন করে ক্রয় তার বিষয়ে প্লানে উল্লেখ করা নাই।
প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন একটি করে নতুন শব্দ শেখার জন্য একটি করে বাংলা খাতা ৩৫ টাকা ও ইংরেজী খাতার বিপরীতে ৩৫ টাকা। কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ক্লাষ্টারে মিটিং করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শাখাওয়াত হোসেন ১৬ পাতার একটি করে খাতা নিয়েছেন ৩৫ টাকা। যা বর্তমান বাজার মূল্যে ১৫ টাকার বেশী হবে না। এতে করে ওই ক্লাষ্টারের ২৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি খাতা সরবরাহ করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেক স্কুলের শিক্ষক তার কাছে নিরুপায় হয়ে ওই নিম্নমানের অনুশীলন খাতা ক্রয় করতে বাধ্য হয়েছেন।
আবার স্কুলের থার্মাল স্ক্যানার একটি করে ধরা হয় ৫ হাজার ৫ শত টাকা, কিন্তু স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা থার্মাল স্ক্যানার কিনেছেন ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। আর বাকী টাকা করেছেন আত্মসাৎ। প্রতিটি স্কুলে স্লিপের বরাদ্দ দেয়া হয় ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার (শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুযায়ী) টাকা । আবার প্রতিটি স্কুলের জন্য ৩ টি করে হোয়াইট (সাদা) বোর্ডের বিপরীতে ২ হাজার ৭ শ’ করে বরাদ্দ দেয়া থাকলেও অনেক স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা নিম্নমানের হোয়াইট বোর্ড কিনেছেন ১২ শ’ থেকে ১৫ শ’ টাকা। কালিকাপুর চৌধুরী পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খোলাহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ৩টি হোয়াইট বোর্ডের স্থানে ২ টি হোয়াইট বোর্ড কিনেছেন প্রধান শিক্ষকদ্বয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরিফা আখতার বলেন,আমি কয়েকটি স্কুলে গিয়েছি এবং তাদেরকে মান সম্মত ভাবে উপকরণ কেনার জন্য বলেছি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি শাহ্ মোঃ আবুল কালাম বারী পাইলট বলেন,সু-নিদ্রিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে ওই সমস্ত ক্লাষ্টার অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন,আমি চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে আছি। আমি দেশে ফিরে ওই বিদ্যালয় গুলোতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।
সময় জার্নাল/এলআর