মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
বিভিন্ন মানুষ থেকে ব্যবসায় ‘অংশীদারিত্ব’ দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানীর প্রতিবাদ ও আমানত ফেরত পাওয়ার দাবিতে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা আতিকুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। আতিকুর রহমান পৌর এলাকার গোমারবাড়ি গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের পুত্র।
বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ক্ষতিগ্রস্ত সফিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে গত ৫ বছর ধরে ইনভেনশন ফ্যাশন হাউজ ও পাঞ্জাবী ওয়ার্ল্ড নামে দুই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছি। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আগস্ট মাসে পাঞ্জাবী ওয়ার্ল্ড চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার শাখার মালিকপক্ষের সাথে চুক্তিপত্র বাতিল করে। পরে দোকানের মালামাল আতিকুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবেল মাহমুদ নিয়ে যায়। সফিউল ইসলামের বিনিয়োগকৃত ৩০ লক্ষ ৯০ টাকা আগস্ট মাসের ১ম সপ্তাহে পরিশোধ করবে বলে ইসলামী ব্যাংক ফেনী শাখার একটি চেক প্রদান করে।
পরবর্তীতে আতিক ও রুবেল সফিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় এবং টাকা না দিয়ে উল্টো বয়োবৃদ্ধ বাবা ও স্ত্রীকে ফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি দমকি দেয়। সফিউল ইসলাম বিষয়টি চৌদ্দগ্রামের কয়েকজন সামাজিক ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করে। গত ৭ অক্টোবর আতিকই চৌদ্দগ্রামের স্থানীয় কিছু সামাজিক নেতৃবৃন্দ নিয়ে ফেনীস্থ ইনভেনশন ফ্যাশন হাউজ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অফিসে বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হলেও আতিক ও রুবেল মাহমুদ সামাজিক ব্যক্তিবর্গের সিদ্ধান্ত তারা মানতে রাজি হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা জয়নাল পাটোয়ারী, বেলাল হোসাইন, নাজমুল হক বাবর, মু. শাহাব উদ্দিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বৈঠকটি অসমাপ্তি রেখে নেতৃবৃন্দ চলে যান। পরে আতিক ও রুবেল মাহমুদ সফিউল ইসলামকে হুমকি দিয়ে বলে ‘তোমাকে কোন রকম টাকা দিবো না’। তাৎক্ষণিক সফিউল ইসলাম ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সফিউল ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার জন্য পরদিন ফেনী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। আতিকুর রহমানের ব্যাংক হিসাবে টাকা না থাকায় ১৩ অক্টোবর ব্যাংক চেকটি ডিজওনার করেন। এরপরে ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম জর্জকোর্ট থেকে ১৭ অক্টোবর আতিকের গ্রামের ঠিকানা ও ফেনীস্থ পাঞ্জাবী ওয়ার্ল্ডে উকিল নোটিশ পাঠায়। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে আতিকুর রহমান ব্যবসায়ের অংশীদার সফিউল ইসলাম ও তার ভাই চট্টগ্রামের মহসিন কলেজের ছাত্র নাইমুল ইসলামের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করে। আতিকুর রহমানকে প্রতারক ও মামলাবাজ উল্লেখ করে সফিউল ইসলাম আরও বলেন, আতিকুর রহমান চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ওমর ফারুক স্বপন, মমতাজ উদ্দিন শামীম, মফিজুর রহমান, জোবায়ের হোসেন মাসুম, মোঃ ওয়ালী উল্লাহ, মাহবুবুল হকসহ আরও বেশ কয়েকজন থেকে ব্যবসায় অংশীদারিত্ব দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আতিকুর রহমান ব্যবসায়ে অংশীদারত্বের কথা বলে সাধারণ মানুষ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে। এ সকল টাকা ভুক্তভোগীরা তাদেরকে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এ সকল টাকা দিয়ে তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ফ্ল্যাট নিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করে আসছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আতিকুর রহমান বলেন, সফিউল ইসলাম আমার ব্যবসায়ের অংশীদার ছিলেন না। সে ইনভেশন ফ্যাশন হাউজের একজন কর্মচারি ছিলেন। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ১৯ লক্ষ টাকার একটি মামলা করি।
সময় জার্নাল/এলআর