নিজস্ব প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দক্ষ যুব সমাজ আমাদের সম্পদ। তাদের কাজে লাগাতে হবে। তারাই ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
মঙ্গলবার জাতীয় যুব দিবস-২০২২ এর অনুষ্ঠান উদ্বোধন ও যুব পুরস্কার ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকরাই শক্তি। তাদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমরা মনে করি, প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তোলা একান্তভাবে অপরিহার্য। আজ কত প্রশিক্ষিত যুব সমাজ আছে, তার ডাটাবেজ থাকা দরকার। এখনো বাংলাদেশের অনেক কর্মক্ষম যুব শক্তি আছে, এটাই আমাদের বড় শক্তি। আমাদের এই জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের যুবকরা এত বেশি মেধাবী, তারা সব কাজে পারদর্শিতা দেখাতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত যুব সমাজ গড়ে তুলতে চাই। এজন্য নানা উদ্যোগও গ্রহণ করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। কারো কাছে হাত পেতে বা মাথা নিচু করে নয়। আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।
এসময় বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যুবকদের সঙ্গে আত্মিক ও মানসিক সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের। তিনি তরুণদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে, অসত্যকে পরিহার করতে, শোষণ-বঞ্চনা, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণা জোগাতেন।
তিনি বলেন, তরুণ যুবকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১৯ আগস্ট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক জনসভায় দেশ গড়ার জন্য যুবক ও তরুণদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘কাজ কর কঠোর পরিশ্রম কর, না হলে বাঁচতে পারবে না, শুধু বিএ, এমএ পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও স্কুলে যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে অবৈধভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব হাতে তুলে নেয়। তারা দেশের যুব সমাজকে বিপথে পরিচালিত করে এবং ইতিহাস বিকৃত করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করে। শিক্ষা উপকরণের বদলে তাদের হাতে তুলে দেয় অস্ত্র, মাদক এবং কালো টাকা। যার ফলে দেশের শিক্ষাঙ্গনগুলো পরিণত হয় সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে। বাংলাদেশের যুব সমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি উপজেলায় আমরা যুব প্রশিক্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র করে দিচ্ছি। যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যানবাহন চালনা প্রকল্প নিয়েছি। এতে যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়াও দেশে ৪০ হাজার দক্ষ ড্রাইভার সৃষ্টি হবে। যুব কর্মসংস্থানের জন্য দেশব্যাপী ইমপ্যাক্ট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬৪ জেলায় ৬৪ হাজার যুব ও যুব নারীকে খামারভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ পরবর্তী ঋণ প্রদানসহ পরিবেশবান্ধব বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে সহায়তা প্রদান করা হবে।
এসময় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ও সচিব মেজবাহ উদ্দিনসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় যুব পুরস্কার-২০২২ দেওয়া হয়েছে আত্মকর্মসংস্থানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের স্বীকৃতি হিসেবে ১৫ জন আত্মকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য ছয় জন যুবসংগঠক, মোট ২১ জন সফল যুবককে।
সময় জার্নাল/এলআর