সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক: নগরীর ভবন মালিকদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ঘুসবাণিজ্য করে আসছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। বর্ধিত গৃহকর কমানোর জন্য নগরবাসীও জিম্মি ছিল তাদের কাছে। আপিল শুনানি নিয়ে চলত এ বাণিজ্য। তবে গৃহকর ইস্যুতে আন্দোলন করা সংগঠন চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার পর পালটে যায় সেই চিত্র। এরপরই ঘুস আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ১২ কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হয়। ইতোমধ্যে চসিক মেয়র অভিযুক্ত ১২ জনের মধ্যে দুজনকে চাকরিচ্যুত এবং ১০ জনকে শোকজ করেছেন। সর্বশেষ রোববার চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ ঘুসবাণিজ্য নিয়ে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছে। নগরীর আগ্রাবাদে দুদক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মাহমুদ হাসানের হাতে এ স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়। এরপরই অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সূত্র জানায়, ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করে চসিক’র গৃহকর আদায়ের ক্ষেত্রে বছরে ২০০ কোটি টাকার ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ সামনে আনে। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে দুদক ও একটি গোয়েন্দা সংস্থা। ১৯ অক্টোবর গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে চসিক’র রাজস্ব বিভাগে কর্মরত অসাধু ১২ জনের তালিকা জমা দেওয়া হয় মেয়রের কাছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। ১২ জনের মধ্যে রাজস্ব সার্কেল-৭ এর কর আদায়কারী কাজী মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ও মোছলেহ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়া বাকি ১০ জন রাজস্ব সার্কেল-৩ এর কর কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন শিকদার, রাজস্ব সার্কেল-৬ এর উপ-কর কর্মকর্তা আবুল কালাম, রাজস্ব সার্কেল-৭ উপ-কর কর্মকর্তা কামরুল হাসান, রাজস্ব সার্কেল-৭ এর কর আদায়কারী রাজীব চৌধুরী, রাজস্ব সার্কেল-১ এর কর আদায়কারী মো. সালাউদ্দিন, রাজস্ব সার্কেল-২ কর আদায়কারী এম তৈয়বুর রহমান, রাজস্ব সার্কেল-৪ এর কর আদায়কারী আনিছ উদ্দিন, রাজস্ব সার্কেল-৫ এর কর আদায়কারী ত্রিদীপ দাশ, রাজস্ব সার্কেল-৬ এর কর আদায়কারী আবদুল মোমেন পাটোয়ারি এবং রাজস্ব সার্কেল-৭ এর কর আদায়কারী মিশকাতুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের মুখপাত্র হাসান মারুফ রুমী যুগান্তরকে বলেন, ‘চসিক এত বছর আয়তন হিসাবেই গৃহকর আদায় হয়ে করছিল। চলতি অর্থবছর থেকে বাড়ি ভাড়ার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর আদায় করা হচ্ছে। এ গৃহকর আপিলে কমিয়ে দেওয়ার নামে ঘুসবাণিজ্য করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। চসিকের ঘুসবাণিজ্য তদন্ত করতে দুদকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ২১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর কদমতলীতে সুরক্ষা পরিষদের প্রতীকী গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে করদাতারা গৃহকর দিতে গিয়ে চসিক’র ভোগান্তির বর্ণনা দেন। এতে দেখা যায়, করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপিলে গৃহকর কমানোর কথা বলে ব্যাপক হারে ঘুস নেন। স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, করপোরেশনে জন্মনিবন্ধন, জাতীয়তা, মৃত্যুসনদের মতো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে ঘুস দেওয়া ছাড়া নাগরিকের কোনো উপায় থাকে না। করপোরেশনের প্রকল্পের কাজ, ক্রয়, টেন্ডার প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে অসাধু কর্মকর্তা ও কিছু কাউন্সিলর জড়িয়ে পড়েছেন। সুরক্ষা পরিষদ মনে করে, করপোরেশন দুর্নীতির সূতিকাগারে পরিণত হয়েছে, তাই দুদক যেন সুষ্ঠু তদন্ত করে নাগরিকদের রেহাই দেন। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করদাতা সুরক্ষা পরিষদের স্মারকলিপি দুদক গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে। ঘুসখোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চসিক’র একাধিক কর্মকর্তা বলেন, করদাতা সুরক্ষা পরিষদ দুদকে স্মারকলিপি দেওয়ার পর থেকে অনেক কর্মকর্তার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল