এম.পলাশ শরীফ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকারিভাবে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে অনলাইনে ডাটাবেজ (এমআইএস) নামে হয়রানির শিকার হয়েছে হতদরিদ্র ৪ হাজার কার্ডধারী সুবিধাভোগীরা। ২ মাস অতিবাহিত হলেও পায়নি তাদের প্রাপ্ত চাল।
আঙ্গুলের ছাপ নিচ্ছে না একাধিক মেশিনে চাল নিতে এসে দিনের পর দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকেও ফিরে যেতে হচ্ছে একাধিক তাদের।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ২৬ হাজার ৪৫৪ জন হতদরিদ্র পরিবার সরকারিভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল পেয়ে আসছেন ৪৫০ টাকায়। চলতি বছরের আগষ্ট মাস থেকে শুরু হয় সংশোধনী তালিকা (অনলাইন ডাটাবেজ)। অনলাইন করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের। তালিকা যাচাই-বাচায়ের নামে আদায় করা হয়েছে ৩০-৭০ টাকা পর্যন্ত। এর পরও তালিকা থেকে বাদ পড়ে জটিলতায় পড়েছে ৪ হাজার ৮৪ জন কার্ডধারী হতদরিদ্র পরিবার। যে কারনে সুবিধা বঞ্চিত এ সব কার্ডধারীরা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের ২ মাসের চাল এখনও পায়নি।
অভিযোগ রয়েছে সুবিধা বঞ্চিত হোগলাপাশা ইউনিয়নের জহোর আলী খা (৭২), সুদেব বিশ্বাস (৬৫), গৌরাঙ্গ শীল (৭৫), অরুন কুমার মিস্ত্রী (৬৫), বিকাশ পাইক (৫০), ছোবাহান মোল্লা (৫০) আব্দুর জব্বার হাওলাদার (৪৫), নমিতা মিস্ত্রী (৬০)সহ একাধিক ভূক্তভোগীরা বলেন, স্থানীয় ইউপি নির্বাচনের জেরে নির্বাচিত চেয়ারম্যানের সমর্থন না করার কারনে আমাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ অনলাইন খরচ বাবদ ৭০ টাকা করে দিতে হয়েছে। এদিকে প্রতিটি ডিলার ২০ হাজার টাকা খরচ করে ফিঙ্গার মেশিন ক্রয় করলেও সে মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ নিচ্ছে না। ডিলাররা বলছেন, একাধিকবার টেকনিশিয়ান এসেও কাজ হচ্ছে না চাল নিতে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেকেই।
অনলাইন জটিলতায় পড়েছে হোগলাপাশা ইউনিয়নে ৪৬১ জন, নিশানবাড়িয়ায় ৫৮২, বনগ্রামে ৫২৭, চিংড়াখালী ১৮৯, তেলিগাতি ১৫৩, পঞ্চকরনে ১২৯, পুটিখালী ১২৮, দৈবজ্ঞহাটী ১৯১, রামচন্দ্রপুর ১২৬, বলাইবুনিয়া ১২৪, হোগলাবুনিয়া ১৫৮, বহরবুনিয়া ১৭৬, জিউধরা ৪১৮, বারইখালী ২৮১, খাউলিয়ায় ২৩০ ও মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ২৩১ জন সুবিধাভোগী কার্ডধারীদের এখনও অনলাইনে ডাটাবেজ সম্পন্ন করতে পারেনি।
এ সর্ম্পকে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অনলাইনে ডাটাবেজ সুবিধাভোগীদের অনেকের এনআইডির সাথে নামের মিল না থাকায় সঠিক তথ্যের গড়মিল হওয়ায়। জটিলতায় পড়েছেন তারা। সকল যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়ে নভেম্বর মাস থেকে চাল পাবেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরকারিভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অলাইন ডাটাবেজে ৪ হাজার ৮৪ জন জটিলতায় পড়েছে। একাধিক সরকারি সুযোগ সুবিধা গ্রহন করা যাবেনা। সঠিক যাচাই করে তালিকা সম্পন্ন করা হচ্ছে। তবে, উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে কেউ বাদ পড়বে পুনরায় তদন্ত করে দেখা হবে। অনলাইন করতে কার্ডধারীদের কাছ থেকে কোন অর্থ গ্রহন করা যাবে না। বিগত ২ মাসের নতুন করে বরাদ্দ আসছে না। নভেম্বর থেকে তালিকার আওতাধীন সকলেই চাল পাবেন।
সময় জার্নাল/এলআর