এম.পলাশ শরীফ,বাগেরহাট প্রতিনিধি :
১৯৭১ সাল স্বাধীনতা যুদ্ধের বছর। মুক্তিবাহিনীকে নদী পারাপার করার অপরাধে পিতাকে ডেকে নিয়ে রাজাকার ক্যাম্পে বেধড়ক পেটালেন। চোঁখের সামনে দশটি বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করলো পাকসেনা ও রাজাকাররা বয়স তখন ১২ বছর চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্র। সবকিছু ভাল ভাবে বুঝি। সেই দিনটির স্মৃতিময় আজও কাঁদিয়ে বেড়ায়।
কথাগুলো বলতে গিয়ে অজোরে কাদলেন বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীর দু’পাড়ের ছোলমবাড়িয়া খেয়াখাটের টোল আদায়কারি সুবল পাটনি। র্দীঘ দিনের ইচ্ছাছিলো বিজয় স্তম্ভ নির্মাণের ২০ বছর পূর্বে নির্মাণ করতে পেরেছি।
স্থানীয়দের সহযোগিতা ও জেলা পরিষদের অনুদানে প্রয়াত সাবেক এমপি মোজাম্মেল হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, তৎকালিন ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাবুল, শহিদুল ইসলামসহ একাধিকের সহযোগিতায় খেয়াখাটের “বীর বাঙ্গালী” এ বিজয় স্তম্ভ।
পরবর্তীতে কোনমতে রংয়ের কাজ হয়েছিলো। বিজয় স্তম্ভটি সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। পাকিস্তান আমল থেকেই ছোলমবাড়িয়া থেকে মোরেলগঞ্জ বন্দরে পানগুছির দু’পাড়ে খেয়া পারাপারে প্রথম নৌকার মাঝি ছিলেন তার পিতা মৃত. কামিনী পাটনি যুদ্ধের সময় বয়স ছিলো ৭৫ বছর।
সে সময়ে এ ঘাটে হাতে গোনা ৮/১০টি খেয়া নৌকা ছিলো, মনে পড়ে শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে কোন একদিন দিনভর প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে বাগেরহাট থেকে লঞ্চ যোগে রাজাকার ছালাম খেয়াঘাটে লঞ্চ থামিয়ে বৃদ্ধ পিতাকে নৌকাসহ বেঁধে নিয়ে গেলো লঞ্চের সাথে। রাজাকারদের অস্থায়ী ক্যাম্প সুকুমার সাহার দালানে। সেখানে তাকে বেধড়ক পেটালেন। কোন এক সময় এলাকার রাজাকার কমান্ডার অহেজ উদ্দিন ও মোসলেম মাষ্টারের চোঁখে পড়লো বাবা। কোনমতে গুলির হাত থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরলো।
এর আগেরদিন রাত ৯টার দিকে ছোলমবাড়িয়া ধোপাবাড়ি মৃত. নারায়ন চন্দ্র দাস, লক্ষি দাস, নকুল দাস, অতুল দাস, কালু দাসসহ ১০টি বসতবাড়ি চোঁখের সামনে অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট করে নেয় রাজাকাররা। সে দিনগুলোর স্মৃতি আজও মনে পড়ে। যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে সে আওতায় আসলে আমিও বিচার দাবি করি ওই ছালাম রাজাকারের। স্বাধীন দেশে বাংলার মাটিতে রাজাকারের বিচার দেখে যেতে চাই।
সময় জার্নাল/এলআর