নিজস্ব প্রতিনিধি:
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের পিএমখালী রেঞ্জে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বনভূমি দখল করে আছে। নির্মাণ করেছে বসতি। গড়েছে স্থাপনা, দোকানপাট। পাহাড়ের মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। এসব বনখোকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। যার প্রেক্ষিতে এখন কঠোর অবস্থানে বনকর্তারা।
বনবিভাগ সুত্রে জানা গেছে, পিএমখালী রেঞ্জের অধীনে বনভূমি ২৫৭৯.৬৫ একর। জবরদখলে রয়েছে ১৩৪১ একর। সেখান থেকে বিগত দুই বছরে ১১০ হেক্টর দখল উচ্ছেদ করা হয়েছে। যার মধ্যে ২০২০-২১ আর্থিক সনে ৪০ হেক্টর এবং ২০২১-২২ সালে ৭০ হেক্টর। উচ্ছেদকৃত জমিতে নতুন বাগান সৃজন করা হয়েছে।
বিগত দুই বছরে ৭৫টি বন মামলা এবং ১৭ টি ডাম্পার গাড়ি আটকপূর্বক মামলা দিয়েছে বন বিভাগ। অবৈধ করাত কল উচ্ছেদ এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মধ্যেমে জরিমানাও আদায় করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেঞ্জ অফিসার আবদুল জব্বার বলেন, ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর জবরদখলবাজদের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করি। সে মতে অগ্রসর হতে থাকি। ইতোমধ্যে দখল উচ্ছেদ, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা ও মামলায় কোণঠাসা হয়ে গেছে দখলবাজরা। রেঞ্জ কর্মকর্তা আরও বলেন, শুধুমাত্র ঘর তৈরীর মাধ্যমে দখল হয়ে আছে ১৩৪১ একর বনভূমি। যেখানে জবরদখলকারী ৩৪৪৮ জন। এসব দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য আমার পূর্বের কর্মকর্তা প্রস্তাব করেছিলেন।
তিনি বলেন, পিএমখালী ও খুরুশকুল মৌজায় প্রায় ৫০ একর বনভূমিতে গৃহহীনদের জন্য মুজিব বর্ষের ঘর নির্মাণ করিয়াছে জেলা প্রশাসন। খুরুশকুল মৌজায় আনুমানিক ৬০ একর বনভূমিতে বস্তিবাসীদের পূর্নবাসন করেছে। যদিও ইতোপূর্বে রেকর্ড সংশোধনী মামলা করেছে বনবিভাগ।
বনভূমিসমূহ ১নং খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তিদের বন্দোবস্তি প্রদান করে জেলা প্রশাসন। বন্দোবস্তি প্রাপ্তরা তাদের নামে খতিয়ান সৃজন করিয়াছে।
তবে, ভূমি অফিস থেকে সঠিক তথ্য না পাওয়ায় কী পরিমান জমি বন্দোবস্তি হয়েছে, সেবিষয়ে জানাতে পারেনি বনবিভাগ।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল জব্বার বলেন, কোন বনবিটে অফিসের চাহিদা অনুপাতে জনবল নেই। একেক বিট চলছে এক বা দুইজন দিয়ে। যে কারণে দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হয়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান, পাহাড় কর্তন বন্ধ এবং ডাম্পার গাড়ী জব্দ করার কারণে আমরা শংকা ও নিরাপত্তাহীনতায় থাকি। তবু সর্বোচ্চ আন্তরিকতাসহ কাজ করে যাচ্ছি।
সময় জার্নাল/এলআর