স্পোর্টস ডেস্ক:
বিশ্বকাপে ডি গ্রুপের খেলায় প্রথমবারের মতো মাঠে নামে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। আল জানোয়াব স্টেডিয়ামে ফরাসিদের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। পল পগবা, ক্রিস্টোফার এনকুনকু, কান্তে ও করিম বেঞ্জেমার ইনজুরিতে চাপে থেকেও জয় নিয়েই বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে ফ্রান্স। এমবাপে- রুদের কাধে ভর করে ৪-১ গোলের জয় পেয়েছে ফ্রান্স। কয়েকটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস না করলে আরো বড় ব্যবধানে জেতার সুযোগ ছিল ফ্রান্সের সামনে।
অবশ্য আক্রমণের শুরুটা অস্ট্রেলিয়ার হাত ধরেই।ম্যাচের একেবারে শুরুতেই নয় মিনিটের মাথায় মিডফিল্ডার ক্রেইগ গুডউইনের গোলে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। আবার ঠিক তখনই হাঁটুতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজ। লুকাসের পরিবর্তে খেলতে নামেন তারই ভাই থিও হার্নান্দেজ।
এক গোলে পিছিয়ে থেকেও এবং নিজেদের সেরা ডিফেন্ডারদের একজনকে হারিয়েও ম্যাচে ফিরতে সময় লাগেনি ফ্রান্সের। ২৭ মিনিটের মাথাতেই বদলি খেলোয়াড় থিও হার্নান্দেজের বাড়ানো বলে হেডারে গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান অ্যাড্রিয়েন র্যাবিয়ট।
দ্বিতীয় গোলটি আসে তার পাঁচ মিনিট পরেই। এবার র্যাবিয়টের অ্যাসিস্টে গোল করেন ফ্রান্সের ৩৬ বছর বয়সী স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরুদ। ফ্রান্সের জার্সিতে এটি তার ৫০তম গোল। থিয়েরি অঁরির পর দ্বিতীয় ফ্রেঞ্চ খেলোয়াড় হিসেবে ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি।
৪৫ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ানোর আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। ডানদিক থেকে গ্রিজম্যান অসাধারণ একটি পাস দিয়েছিলেন এমবাপের দিকে। কিন্তু বারের ওপর দিয়ে বল মেরে সহজ ওই সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপে। ছোট-বড় সুযোগ মিস হয়েছে আরো একাধিক। ২-১ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই এবার আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে ফ্রান্স। প্রথমার্ধের গোল মিসের ক্ষতি দ্বিতীয়ার্ধে পুষিয়ে দেন এমবাপে একটি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করে। ৬৮ মিনিট সময়ে ডেম্বেলের বাড়ানো বলে দলের বয়ে তৃতীয় গোলটি করেন কিলিয়েন এমবাপে। ঠিক তিন মিনিট পরেই এম্বাপ্পের লেফট উইং থেকে বাড়ানো ক্রসে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন জিরুদ। ফ্রান্সের হয়ে এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা থিয়েরি অরি। তিনি গোল করেছিলেন ৫১টি। এই গোলটির পরে এখন থিয়েরি অঁরির সাথে যৌথভাবে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন অলিভিয়ের জিরুদ। আর একটি গোল করলেই অঁরিকে ছাড়িয়ে ফ্রান্সের এ যাবতকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হবেন তিনি।
অবশ্য এছাড়াও আরেকটি রেকর্ড করেছেন তিনি। ৩৬ বছর ৫৩ দিন বয়সে দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে জোড়া গোলের কীর্তি গড়লেন তিনি। এর আগে ৩৮ বছর বয়সে ক্যামেরুনের হয়ে বিশ্বকাপে এক ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন রজার মিল্লা।
এদিকে তৃতীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে চার বা চারের বেশি গোল করল ফ্রান্স। এর আগে এই কীর্তি গড়েছিল ব্রাজিল (২০০২) এবং জার্মানি (২০১০)।
বিশ্বকাপে একের পর এক খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়েছে ফ্রান্সের। লুকাস হার্নান্দেজের চোট সারতেও বেশ সময় লাগবে বলেই অনুমেয়। এই ইনজুরি চ্যালেঞ্জ সামলে আগামী ম্যাচগুলোর পরিকল্পনা কিভাবে করবেন লে ব্লুজদের প্রশিক্ষক দিদিয়ের দেশম, সেটিই দেখার অপেক্ষায় থাকবে বিশ্ব।
সময় জার্নাল/এলআর