স্পোর্টস ডেস্ক:
চলতি বিশ্বকাপে এমনিতেই চমকের শেষ নেই। একে একে সব ফেভারিট পেয়েছে হারের বিস্বাদ। নেদারল্যান্ডস এমনিতে বিশ্বকাপের ফেভারিট নয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তারাই ছিল ফেভারিট। তবে দুই গোলে পিছিয়ে পড়া যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচের ৭৬ মিনিটে গোলটা যখন করল, তখন খানিকটা নড়েচড়ে না বসে উপায় ছিল না। এবারের বিশ্বকাপ যে আন্ডারডগদের জয়জয়কার দেখেছে বেশুমার! তবে ডাচরা তেমনটা হতে দেয়নি আজ। শেষমেশ ৩-১ গোলের জয় নিয়েই নিশ্চিত করে ফেলেছে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল।
সেনেগাল, ইকুয়েডর আর কাতারের গ্রুপ থেকে সেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে আসাটা নেদারল্যান্ডসের একপ্রকার অনুমিতই ছিল। কোচ লুই ফন হালের দলের প্রথম বড় প্রতিপক্ষটা তাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রই। যদিও তাদের সাম্প্রতিক পারফর্ম্যান্সটা মোটেও কথা বলছিল না পক্ষে। বিশ্বকাপের আগে শেষ উইন্ডোতে জাপান আর সৌদি আরবের বিপক্ষে খেলে দলটি ছিল জয়শূন্য, এরপরও; চলতি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে হাতে গোণা কয়েকটি অপরাজিত দলের একটি যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র!
তবে মাঠের খেলায় তার ছাপ পড়েনি। শুরু থেকে দাপুটে পারফর্ম্যান্সে ডাচরা জানান দিয়েছে, এই বিশ্বকাপে এখনই বিদায়ঘণ্টা বেজে যাচ্ছে না তাদের। ম্যাচের দশম মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যায় টোটাল ফুটবলের দেশ নেদারল্যান্ডস। দারুণ পাসিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসে ডাচরা, যার শেষে ডান উইং থেকে রক্ষণ চেরা এক নিচু ক্রসে বক্সে মেম্ফিস ডিপাইকে সুযোগ গড়ে দেন ড্যানজেল ডাম্ফ্রিস, বুদ্ধিদীপ্ত এক শটে গোল করেন মেম্ফিস।
পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি মার্কিনিরা। মুহুর্মুহু আক্রমণে সমতাসূচক গোলের খোঁজ করছিলেন ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিকরা। তবে তাদের সে চেষ্টায় ডাচরা পানি ঢালে বিরতির একটু আগে। ড্যালি ব্লিন্ডের গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় নেদারল্যান্ডস।
বিশ্বকাপে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ২৩ ম্যাচে শুরুতে গোল হজম করেছে, হেরেছে ১৮টিতেই, বাকি সব ম্যাচ করেছে ড্র। এমন পরিসংখ্যানটা আজ গোল হজমের পর যেন বদলে দেওয়ার লক্ষ্যেই নেমেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে সেটার অর্ধেক করেও বসেছিল দলটি। পুলিসিকের পাস থেকে গোল করেন হাজি রাইট। তখন মনে হচ্ছিল, কাতার বিশ্বকাপ তার গ্রুপ পর্বে তীব্র রোমাঞ্চ উপহার দেওয়ার পর বুঝি নকআউটের জন্যও তুলে রেখেছে কিছু রোমাঞ্চ-উত্তেজনা!
তবে এরপরই সে রোমাঞ্চের সম্ভাবনা শেষ করে দেয় নেদারল্যান্ডস। ৮১ মিনিটে প্রতি আক্রমণে উঠে এসে গোলটা করেন আগের দুই গোলের যোগানদাতা ড্যানজেল ডামফ্রিস। যুক্তরাষ্ট্র কোচ গ্রেগ বারহল্টার তখন রীতিমতো মাথায় হাত দিয়ে বসেই পড়েছেন, সুযোগটা যে হাত ফসকে গেছে তখনই!
এরপরও অবশ্য তার দল হাল ছাড়েনি। বারতিনেক আক্রমণে উঠেছে গোল শোধের নেশা নিয়ে। কিন্তু কাজের কাজটা আর করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। হারানো সুযোগ যে বারবার আসে না!
৩-১ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় নেদারল্যান্ডস। নিজেদের আগের দুই বিশ্বকাপে নিদেনপক্ষে সেমিফাইনাল খেলেছিল দলটি। সবশেষ ছয়টি শেষ ষোলোর পাঁচ বারই হেসেছে শেষ হাসি, হাসল এবারও। প্রথম দল হিসেবে পা রাখল কাতার বিশ্বকাপের শেষ আটে।
এমআই