আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
কখনও মাঝ আকাশে বিমানে আগুন। কখনও অবতরণের সময় ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়া। কিংবা রানওয়ে ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাহাড়ের বুকে হারিয়ে যাওয়া। ৩০ বছরে ৩০টিরও বেশি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে নেপালে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। কেন বারবার হিমালয়ের কোলের এই দেশে ঘটছে বিমান দুর্ঘটনা?
রোববার সকালে দেশটির পোখারায় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি বিমান বিধস্ত হয়েছে। এতে থাকা ৭২ জনের বেশিরভাগই প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৪০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এর পেছনে রয়েছে মূলত তিনটি কারণ। প্রথমত, নেপালের ভূপ্রাকৃতিক গঠন। নেপালের অবস্থান সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে সাড়ে ছয় হাজার মিটারের বেশি হওয়ায় এখানে বিমানে বিমান পরিষেবা দেওয়া খুবই কঠিন। এর মধ্যে আবার পোখরা বিমানবন্দরের কাছে হিমালয়ের একাধিক শৃঙ্গ থাকায় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে।
দ্বিতীয়ত, কুয়াশার দাপট। নেপাল প্রশাসনের দাবি, বিমান দুর্ঘটনার সিংহভাগই ঘটেছে কুয়াশার জেরে। শীতকালে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় অনেক সময়ই উড়ান সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে পাহাড়ের গায়ে।
তৃতীয়ত, নেপালের অর্থনীতি। কাঠমান্ডুর আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণ বিমান চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এর জেরেও দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৪৯ সালে নেপালের মাটিতে প্রথম উড়োজাহাজ অবতরণ করে।
এভারেস্টসহ পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ১৪ পর্বতের ৮টি নেপালে। দেশটির আবহাওয়া হটাৎ করেই বদলে যায় এবং বেশিরভাগ এয়ারস্ট্রিপ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোতে অবতরণ করতে অত্যন্ত চৌকস ও অভিজ্ঞ বৈমানিকদেরও বেগ পেতে হয়।
দেশটির উল্লেখযোগ্য বিমান দুর্ঘটনার মধ্যে রয়েছে- ১৯৯২ সালে থাই এয়ারওয়েজের এয়ারবাস এ৩১০, ১৯৯২ সালে পিআইএর এয়ারবাস এ৩০০, ২০০০ সালে নেপালের রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট, ২০০৬ সালে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট, ২০০৬ সালে শ্রী এয়ারের ফ্লাইট, ২০১০ সালের অগ্নি এয়ারের ফ্লাইট ১০১, ২০১০ সালে তারা এয়ারের ফ্লাইট, ২০১১ সালে বুদ্ধা এয়ারের ফ্লাইট ১০৩, ২০১২ সালে অগ্নি এয়ারের ফ্লাইট, ২০১২ সালে সিতা এয়ারের ফ্লাইট ৬০১ এবং ২০১৬ সালে তারা এয়ারের ফ্লাইট ১৯৩ ইত্যাদি।
এমআই