সর্বশেষ সংবাদ
নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের। পরপর দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন তিনি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী তার আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। সে কারণে নতুন কাউকে দেখা যাবে তার জায়গায়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ করতে হবে। সে হিসেবে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনেই হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। যথাসময়ে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনও তাদের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, যিনি আইন অনুযায়ী সংসদ-সদস্যগণ কর্তৃক নির্বাচিত হইবেন।যেহেতু জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, তাই ধরে নেওয়া হয় তারাই এই পদে প্রার্থী দেবে এবং সেই প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই হবেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি। রোববার (১৫ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কশিমনার (ইসি) মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘যথাসময়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ‘প্রক্রিয়া’ শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া আমরা শুরু করে দিয়েছি। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’তবে কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে, সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি এই নির্বাচন কমিশনার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এভাবে তো বলতে পারবো না, যথাসময়ে হবে। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইন অনুযায়ী স্পিকারের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ প্রসঙ্গে আলাপ হবে।’ এরই মধ্যে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কে হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি- এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ‘যেহেতু সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ। সংবিধান অনুযায়ী তারাই রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন ও নির্বাচনে সর্বোচ্চ ক্ষমতাপ্রাপ্ত। তারা যাকে মনোনয়ন দেবেন তিনিই হবেন দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। তবে, ব্যাপারটি একান্তই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব এখতিয়ারের মধ্যে। এটি আগাম কারও পক্ষে বলা সমীচীন নয়, সহজও নয়। তিনি যেটা ঠিক করেন, দলের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মী তাকে সেভাবে সহযোগিতা করেন।’ তবে এ নিয়ে রাজনৈতিক আড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের নানা সমীকরণ উঠে এসছে। আর সেসব সমীকরণে নানাজনের নামও আসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী নাম। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে তাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। স্বচ্ছ রাজনীতিক, উচ্চশিক্ষিত ও মার্জিত শিরীন শারমিন বেশ দক্ষতার সঙ্গে সংসদ সামলাচ্ছেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকেও স্পিকার পদ থেকে এনে রাষ্ট্রপতি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে মন্ত্রিপরিষদের সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হককে এগিয়ে রাখছেন অনেকে। আবার প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নামও চাউর হয়েছে। তবে সরাসরি রাজনীতি করে আসা ছাড়া কারও রাষ্ট্রপতি পদে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ, সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বেশি হলেও দেশের যেকোনো সংকটে রাষ্ট্রপতিকেও শক্ত ভূমিকা রাখতে হয়। নজির আছে- সাবেক আমলা বা বিশিষ্টজনদের অনেকে এ পদে এসে সেই ভূমিকা রাখতে পারেননি। আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসকেন্দ্রিক আড্ডায় দলটির সম্মেলনপূর্ব ও পরবর্তী সময়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম রাষ্ট্রপতি পদে বেশি উচ্চারিত হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী বলে আসছেন, সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদের সিরিয়ালে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাতে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে রাষ্ট্রপতি করা হলে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হিসেবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নাম আলোচনায় সর্বাগ্রে। তবে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ সারথী হিসেবে ওবায়দুল কাদের যেভাবে দল ও সরকারের কাজ নিরলসভাবে করছেন, তাকে রাষ্ট্রপতি করা হলে দলীয় এবং সরকারি সেসব কাজে ব্যাঘাত বা ছন্দপতন হয় কি না, সে ভাবনা এখন সামনে আসছে। যে কারণে আলোচনায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও আছেন।’ তবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি পদের যোগ্য মনে করেন না বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের। ১২ জানুয়ারি সচিবালয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তার নাম আলোচনায় আসছে জানিয়ে প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই পদে বসার যোগ্যতা আমার নেই।’ রাষ্ট্রপতি মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবেচনা বা পছন্দের বিষয়। ওনার আস্থায় যিনি আছেন, তাকে তিনি ঠিক করবেন। উনি যেটা ঠিক করেন, দলের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মী ওনাকে সেভাবে সহযোগিতা করেন। সুতরাং এই ব্যাপার একান্তই ওনার নিজস্ব এখতিয়ারের মধ্যে। এটি আগাম কারও পক্ষে বলা সমীচীন নয়, সহজও নয়। এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই, ধারণাও নেই।’ এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল