বুধবার, জানুয়ারী ২৫, ২০২৩
সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চ্ত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
জানা যায়, গত শনিবার শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে উপাচার্য ক্যাম্পাসে আসলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন স্থগিত করেন। কিন্তু ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন তারা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল ১০টা থেকে উপাচার্যের সাথে কথা বলতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান করছিলেন বিভাগটির প্রায় শতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী। সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সাথে দেখা করেন শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু কোন সমাধান না পেলে আন্দোলন জোরদার করেন শিক্ষার্থীরা। তারা প্রশাসন ভবনের সামনের পথ অবরুদ্ধ করে বসে থাকেন। এসময় তাদেরকে দাবি সংবলিত ফেস্টুন হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, 'প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগটির জন্য কোনো শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আমরা যখন আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে মীর মশাররফ হোসেন ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণে চলে গিয়েছি তথন থেকে আমরা বিভিন্নভাবে হুমকির শিকার হচ্ছি। নিজস্ব অধিকার আদায় করতে গিয়ে যদি এভাবে হুমকির শিকার হই, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা ২০১৭-১৮ সেশন অনার্স শেষ করে ফেলেছি, শুধুমাত্র একটি মুটকোর্টের কারণে গ্রেজুয়েশন সম্পন্ন হচ্ছে না। আমাদের এই যে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, এর দায় কে নিবে?
তারা বলেন, 'এর আগে যখন আমরা মানববন্ধন করেছিলাম এবং উপ-উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি, তখন তিনি বলেছিলেন উপাচার্য আসলে আমাদের সাথে কথা বলবেন। আজকে যখন আমরা স্যারের সাথে কথা বলতে গিয়েছি তখন প্রশাসনের কেউই আমাদের সাথে শিক্ষার্থীবান্ধব আচরণ করেন নি। এমনভাবে আচরণ করা হয়েছে যেন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউই না। তারা আমাদের কোনোরকম আশ্বস্তও করেননি। যখন আমরা বলেছি যে, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তখন তারা বললেন তোমরা যা ইচ্ছা করো। এ বিষয়ে আমাদের আর কিছু বলার নেই।'
আন্দোলনের এক পর্যায়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। অনশন কর্মসূচির প্রায় বিশ মিনিটের মাথায় সেখানে উপস্থিত হন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেন এবং প্রশাসন কর্তৃক দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস প্রদান করা হলে আন্দোলন স্থগিত করে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষার্থীদেরকে তাদের অবস্থান করা ভবনের ওই দুই ব্লকে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্যও বলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি থেকে শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
এমআই