নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সুইজারল্যান্ডের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।
সাক্ষাতেই প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকার আইন প্রণয়নের পর সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে।
আগামী নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক আসা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন তদারকি করতে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসবেন এবং তারা স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং এর ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এবং বাজেটের ওপরও নেই।
আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে সরকার গঠন করবে। আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে এবং গণতন্ত্রের বিকাশে কাজ করে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল যার ভিত্তি তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত রয়েছে। আওয়ামী লীগের জন্ম গণমানুষ থেকে।
বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্ম সেনানিবাস থেকে। এই দুই দলের প্রধান প্রথমে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্রপতি হন, পরে তারা তাদের রাজনৈতিক দল গঠন করেন। জনগণের মধ্যে তাদের কোনো ভিত্তি নেই।
জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিল। জনগণের মধ্যে তাদের কোনো ভিত্তি নেই।
বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে সরকার দেশের ব্যাপক রূপান্তর ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগ ও তার জোটকে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ভোট দেওয়ার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে পশ্চিমা দেশগুলোকে সমর্থন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশের জন্য বোঝা।
কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কষ্টে ফেলেছে। আমরা এই প্রভাব বন্ধ করার চেষ্টা করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এই যুদ্ধে কাদের লাভ? শুধু অস্ত্র বিক্রেতারাই লাভবান হচ্ছে। বিশ্বের উচিৎ অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করা।
বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে এবং তার দেশ এ মসৃণ উত্তরণে বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। আমি সবসময় বাংলাদেশের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে থাকব।
সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য এবং চিত্তাকর্ষক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করে মুগ্ধ হয়েছেন।
নাথালি চুয়ার্ড বলেন, বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। আশা করছি, বাংলাদেশ এই সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আরও এগিয়ে যেতে পারবে।
গণতন্ত্রের মান, এর স্থিতিশীলতা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের প্রশংসা করেন নাথালি চুয়ার্ড।
বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের দ্রুত স্বদেশে ফিরে যাওয়া উচিত।
এমআই