বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৩
এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে ইজি বাইক থেকে নামিয়ে একটি মেহগনির বাগানে নিয়ে হাবিব ফকির (৩২) নামের এক যুবককে দুই পায়ে গুলি করে আহত করার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিদেশী পিস্তল,গুলি, ম্যাগজিন, চাকু ও মদসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (০১ ফেব্রুয়ারী) দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় পুলিশ।
এ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতয়ালী থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে জেলার সালথা উপজেলার রসুলপুর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচ ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে যে পিস্তল দিয়ে হাবিব ফকিরকে গুলি করা হয় সেই পিস্তল, একটি গুলি, তিনটি ধাঁরাল চাকু ও এক বোতল দেশীয় মদ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচ ব্যক্তি হলেন, মো. সোহেল ফকির (২৮), শেখ খসরু (৩৬) ও মো. রিপন ওরফে লিমন (২৫) এবং শাহীন মোল্লা (৩৭) ও মো. তুষার (৫৩)।
হাবিব ফকিরকে গুলি করার ঘটনায় তার ভাই আক্কাস ফকির বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুরের কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অপরদিকে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাববুবুর রহমান বাদী হয়ে সালথা থানায় ওই পাঁচ ব্যাক্তিকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি সহ আরও দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাস ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকিরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। আহত হাবিব ফকির কৃষ্ণপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের সমর্থক। একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি মঙ্গলবার সকালে আদালতে এসেছিলেন। হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে একটি ইজিবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ইজিবাইকটি দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে পৌঁছালে কৃষ্ণপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাসের সমর্থক কয়েকজন অস্ত্রধারী ইজি বাইকের গতি রোধ করে হাবিববে নামিয়ে সড়কের পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে হাবিবের দুই পায়ে গুলি করে। এছাড়া ডান ও বাম পায়ে কুপিয়ে জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটিয়ে আহত করে।
জানা যায়, হাবিব ফকির সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের গোলাপ ফকিরের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
হাবিব ফকির বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল গফফার, পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিল হোসেন, পরিদর্শক (পুলিশ কন্ট্রোল) সেলিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হাবিব ফকিরের ওপর হামলার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান জানান, বুধবার (০১ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচ ব্যাক্তিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ পরে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
এমআই