আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের অর্থনৈতিক বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চিত করেছে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তারা বিলিওনিয়ার গৌতম আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। খবর বিবিসির।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) আরও বলছে, তারা এই রিপোর্টের পর শেয়ার বাজারের কার্যকলাপ পরীক্ষা করে দেখেছে। বাজার কারসাজি এবং আর্থিক জালিয়াতির দাবি ওঠার পর স্টক মার্কেটে আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের ১০০ বিলিয়ন ডলার লোকসান হয়েছে। তবে আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সোমবার ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের কাছে এক আবেদনে সেবি বলছে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের "প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এবং পরে বাজারের কার্যকলাপ" তারা যাচাই করে দেখছে এবং অভিযোগগুলি বিশ্লেষণ করছে।
"সিকিউরিটিজ বাজারের স্থিতিশীল ক্রিয়াকলাপ এবং উন্নয়নের জন্য নিয়ন্ত্রক কাঠামো স্থাপন করার প্রশ্নে সেবি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং পর্যাপ্ত-ভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত," সুপ্রিম কোর্টের আবেদনে সেবি উল্লেখ করেছে।
এ ব্যাপারে মন্তব্যের জন্য বিবিসির অনুরোধে আদানি গ্রুপ এখন পর্যন্ত কোন সাড়া দেয়নি। কিন্তু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে আদানি গ্রুপ বলেছে, তাদের নগদ প্রবাহ জোরদার রয়েছে এবং এর ব্যবসায়িক পরিকল্পনাগুলিতে সম্পূর্ণভাবে অর্থায়ন করা হয়েছে।
"শেয়ারহোল্ডারদের উচ্চতর মুনাফা দেয়ার প্রশ্নে আমাদের পোর্টফলিওর ক্ষমতার ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী," প্রতিষ্ঠানটি বলেছে।
এদিকে, এই গোষ্ঠীর প্রধান কোম্পানি, আদানি এন্টারপ্রাইজ, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর – এই তিন মাসে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার মুনাফার কথা ঘোষণা করেছে। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিতে দেড় কোটি ডলার লোকসান হয়েছিল।
বিমানবন্দর, কয়লা এবং নতুন জ্বালানি ব্যবসায় শক্তিশালী পারফরম্যান্সের সুবাদে এর মোট আয় ৪২% বেড়ে ৩.৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
তবে প্রবৃদ্ধির হিসেব কিংবা বিনিয়োগ পরিকল্পনায় আদানি গ্রুপ এখনও কোন কাটছাঁটের ঘোষণা করেনি, কিংবা হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর একটি পরিবেশ-বান্ধব হাইড্রোজেন প্রকল্পের ব্যাপারে আদানির সাথে অংশীদারিত্ব স্থগিত করার প্রশ্নে ফ্রান্সের টোটালএনার্জির সিদ্ধান্তের বিষয়েও কোন মন্তব্য করেনি।
গত মাসে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যাওয়ার পরে মুম্বাইয়ের স্টক এক্সচেঞ্জে এর দর ৫ শতাংশ বেড়েছে। আদানির গ্রুপে সাতটি কোম্পানি রয়েছে যারা কমোডিটিস ট্রেডিং, বিমানবন্দর, পরিষেবা, নৌ-বন্দর এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিস্তৃত সেক্টর জুড়ে কাজ করে থাকে।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয় যে আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলো গত কয়েক দশক ধরে শেয়ার বাজারে ফাঁকিবাজি এবং হিসাবপত্র জালিয়াতি করে আসছে।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আরও দাবি করেছে, আদানির কোম্পানিগুলির "বিশাল ঋণ" রয়েছে যা পুরো গ্রুপটির “অর্থনৈতিক ভিত্তিকে অনিশ্চিত” করে তুলেছে। আদানি গ্রুপ স্পষ্টভাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এমআই