বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৩
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
বর্তমানে প্রায়ই অনেকের হার্নিয়ার অস্ত্রোপচারের কথা শোনা যায়। এই রোগটি বেশ পরিচিত হলেও একে ঘিরে রয়েছে প্রচুর ভ্রান্ত ধারণা। অনেকের ধারণা, হার্নিয়া কেবল পুরুষের রোগ। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এই রোগকে অত গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।
ভুল ভাবনার কারণে বেশিরভাগ মানুষ সঠিক সময়ে হার্নিয়ার চিকিৎসা করান না। ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। আজ চলুন রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিই-
হার্নিয়া কী, কেন হয়?
ধরুন একটি বালতিতে ফুটো হয়ে গেল। এতে কী হবে? পানি বাইরে বেরিয়ে আসবে। হার্নিয়ার ক্ষেত্রে ঠিক এমনটাই ঘটে। আমাদের পেটের পেছনের দিকে হাড় আর সামনের অংশে রয়েছে পেশী। এর ভেতর থাকে অন্ত্র, নালি আর চর্বি। এখন পেটের মধ্যে কোথাও ফুটো হয়ে গেলে ভেতরের এই পদার্থগুলো বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইবে। এই পরিস্থিতিকেই হার্নিয়া বলে।
প্রাইমারি হার্নিয়া
পুরুষদের গোনাড অঙ্গে দুর্বলতা সৃষ্টি হলে গ্রোইন হার্নিয়া হতে পারে। পরিণতবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে এই রোগটি বেশি হয়। স্থূলতার কারণে অনেকে নাভিতেও হার্নিয়া হয়। বেশ কয়েক বার গর্ভবতী হলে নারীদের তলপেটের অংশ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে নারীদের তলপেট কমজোরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে হতে পারে আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া।
সেকেন্ডারি বা ইনসিশনাল হার্নিয়া
অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়ে কোনো কারণে সেলাই খুলে গেলে ইনসিশনাল হার্নিয়া হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে সিজারিয়ান সেকশন বা হিস্টেরেক্টমির পর তলপেটে এই প্রকার হার্নিয়া দেখা যায়। তবে যেকোনো অস্ত্রোপচারের পরেই এই হার্নিয়া হতে পারে। ক্যানসার রোগীর অস্ত্রোপচারের পরে শারীরিক দুর্বলতার জন্য ঘা না শুকোলেও হার্নিয়া হয়। আবার পেটে ফুটো বা সংক্রমণের কারণে জরুরিভিত্তিক অস্ত্রোপচারের পরেও ঘা পেকে হার্নিয়া হতে পারে।
হার্নিয়ার লক্ষণ কী?
দেহের কুঁচকিতে, নাভির কাছে বা পুরনো অস্ত্রোপচারের ক্ষতের কাছে কোমো ফোলা ভাব থাকলে, কিংবা সেখানে ব্যথা হলে হার্নিয়া হতে পারে। এ ছাড়া ভারী জিনিস তুলতে গেলে ব্যথা, মলত্যাগে সমস্যা, সারাক্ষণ পেট ভার হয়ে থাকা হার্নিয়ার উপসর্গ হতে পারে।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
বয়স্কদের ওজন বেশি এই রোগের ঝুঁকি থাকে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি। অস্ত্রোপচার হলে, পরিবারে কারও হার্নিয়া থাকলে অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলেও হার্নিয়ার সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।
সময় থাকতে রোগটি নিয়ে সচেতন হোন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এমআই